বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ও সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেছেন, শিক্ষাই জাতির মেরুদন্ড। আর সেই মেরুদন্ডের মূল ভিত্তি হলো শিক্ষক সমাজ। মানুষ গড়ার কারিগর হিসেবে শিক্ষকগণ জাতি ও সমাজ গঠনে অনন্য ভূমিকা পালন করেন। তাদের অবহেলা করে কোনো দেশ বা সমাজের উন্নয়ন সম্ভব নয়।
তিনি এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের আন্দোলনের মাধ্যমে আংশিকভাবে দাবি আদায় করতে পারায় আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করেন এবং আন্দোলনকারী সকল শিক্ষককে আন্তরিক অভিনন্দন জানান।
২১ অক্টোবর সন্ধ্যায় জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে আগত শিক্ষক নেতৃবৃন্দের উদ্দেশে তিনি এসব কথা বলেন।
সাক্ষাৎকালে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ আদর্শ শিক্ষক ফেডারেশনের মহাসচিব অধ্যাপক এবিএম ফজলুল করিম, জামায়াতের কেন্দ্রীয় শিক্ষা বিভাগের সদস্য অধ্যক্ষ মাওলানা ড. খলিলুর রহমান মাদানী, ফেডারেশনের সহকারী সেক্রেটারি অধ্যাপক মো. রবিউল ইসলাম, বাংলাদেশ কলেজ শিক্ষক পরিষদের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব অধ্যাপক আ জ ম কামাল উদ্দিন, মাদ্রাসা শিক্ষক পরিষদের সেক্রেটারি মাওলানা আব্দুস সবুর মাতব্বর।
উপস্থিতি ছিলেন, কিন্ডারগার্টেন শিক্ষক পরিষদের সভাপতি অধ্যক্ষ মো. সিরাজুল ইসলাম, প্রাইমারি শিক্ষক পরিষদের সভাপতি অধ্যক্ষ ড. সাখাওয়াত হোসাইন, মাদ্রাসা শিক্ষক-কর্মচারী ফোরামের সভাপতি অধ্যক্ষ দেলোয়ার হোসেন আজিজী, এমপিওভুক্ত শিক্ষক পরিষদের সভাপতি মো. নূরুল আমিন হেলালী, সহ-সভাপতি মো. রকিবুল হাসান ও মো. মিজানুর রহমান মাহীন, সাধারণ সম্পাদক মো. আশরাফুজ্জামান হানিফ, প্রেসিডিয়াম সদস্য আবু তালেব সোহাগ, সদস্য মো. আমজাদ হোসেন, মো. হাবিবুল্লাহ, মো. তোফাজ্জল হোসাইন এবং ইবতেদায়ী মাদ্রাসা শিক্ষক পরিষদের সভাপতি মো. গোলাম আযম প্রমুখ।
অধ্যাপক মুজিবুর রহমান আরও বলেন, শিক্ষকদের উপযুক্ত সম্মান ও মর্যাদা প্রদান করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। শিক্ষকগণ যাতে সমাজে সম্মানের সঙ্গে জীবনযাপন করতে পারেন, সে জন্য তাদের প্রথম শ্রেণির নাগরিকের মর্যাদা দিতে হবে।ৎ
তিনি বলেন, উন্নত দেশগুলোতে জাতীয় বাজেটের গড়ে ৭ শতাংশ শিক্ষাখাতে বরাদ্দ দেওয়া হয়, অথচ আমাদের দেশে তা মাত্র ১.৬৭ শতাংশ- যা জাতির জন্য লজ্জাজনক। আগামী বাজেটে অন্তত ৩ থেকে ৪ শতাংশ শিক্ষাখাতে বরাদ্দ রাখার দাবি জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন, শিক্ষকদের প্রকৃত মর্যাদা দিতে হলে শিক্ষাব্যবস্থার পূর্ণ জাতীয়করণ করতে হবে এবং শিক্ষা ক্ষেত্রে বিদ্যমান বৈষম্যের অবসান ঘটাতে হবে। পাশাপাশি শিক্ষকদের খাবার, পোশাক, শিক্ষা, চিকিৎসা ও বাসস্থানের নিশ্চয়তা দিতে হবে।
তিনি জানান, দেশে প্রায় ৬ লক্ষাধিক শিক্ষক দীর্ঘ আন্দোলনের মাধ্যমে তাঁদের দাবি আংশিকভাবে আদায় করেছেন। এ আন্দোলনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর পাশাপাশি বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও শ্রেণি-পেশার মানুষ যে সমর্থন ও সহযোগিতা দিয়েছেন, তার জন্য তিনি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, “আল্লাহ সবাইকে দুনিয়া ও আখিরাতে এর উত্তম প্রতিদান দিন।
শিক্ষক প্রতিনিধিদের পক্ষ থেকে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোটের সদস্য সচিব মোঃ দেলোয়ার হোসেন। তিনি বলেন, শিক্ষকদের আন্দোলনের প্রতি পূর্ণ সমর্থন ও সর্বাত্মক সহযোগিতা প্রদানের জন্য আমরা ৬ লক্ষ শিক্ষকের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ও এর নেতৃবৃন্দের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাই।
তিনি শিক্ষকদের ন্যায্য দাবির প্রতি সমর্থন ও সহযোগিতা প্রদানকারী সকল রাজনৈতিক দল, বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার নেতা, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শুভানুধ্যায়ীদের প্রতিও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।