ইন্দোনেশিয়ার পূর্ব আচেহ উপকূলে ডুবে যাওয়া নৌকা থেকে ১১৬ জন রোহিঙ্গা শরণার্থীকে উদ্ধার করা হয়েছে। জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা (ইউএনএইচসিআর) শনিবার এ তথ্য জানিয়েছে। উদ্ধার হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে নারী ও শিশুরাও রয়েছে।
মিয়ানমারে নিপীড়নের শিকার মুসলিম রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর অনেকেই প্রতিবছর বিপজ্জনক সমুদ্রযাত্রা করে মালয়েশিয়া বা ইন্দোনেশিয়ায় আশ্রয়ের সন্ধানে যায়। ইউএনএইচসিআরের ফয়সাল রহমান এএফপিকে জানান, পূর্ব আচেহ সরকার থেকে প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, মোট ১১৬ জন শরণার্থী উদ্ধার হয়েছেন। তারা এখনও সৈকতে অবস্থান করছেন এবং তাদের কোথায় নেওয়া হবে তা এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
পূর্ব আচেহের উত্তর-পূর্ব সুমাত্রা দ্বীপের উপকূলে অর্ধেক ডুবে যাওয়া কাঠের নৌকাটি খুঁজে পাওয়া যায়। স্থানীয় জেলে সাইফুদ্দিন তাহের জানান, শনিবার সকালে নৌকাটি আচেহের জলসীমায় প্রবেশ করে। কয়েক ঘণ্টা পরে এটি প্রায় ডুবে যায়।
সাইফুদ্দিন বলেন, সব যাত্রী বেঁচে আছেন। তবে একজন অসুস্থ ছিলেন এবং তাকে সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। নৌকাটি উপকূল থেকে মাত্র ১০০ মিটার দূরে ছিল, ফলে শরণার্থীরা সহজেই হেঁটে নিরাপদে আসতে পেরেছেন।
ইন্দোনেশিয়ায় রোহিঙ্গাদের আগমন একটি চক্রাকার প্যাটার্ন অনুসরণ করে। ঝড়ের সময় আগমন কম থাকলেও শান্ত সমুদ্রের সময় এটি আবার বেড়ে যায়। গত মাসেও দক্ষিণ আচেহ উপকূলে ১৫২ রোহিঙ্গা শরণার্থীকে উদ্ধার করা হয়েছিল।
ইন্দোনেশিয়া জাতিসংঘের শরণার্থী কনভেনশনের সদস্য নয় এবং শরণার্থী গ্রহণে তারা বাধ্য নয় বলে জানিয়েছে। তারা প্রতিবেশী দেশগুলোকে রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসনের আহ্বান জানাচ্ছে।
আচেহের জনগণের অনেকে নিজেদের অতীত সংঘাতের অভিজ্ঞতার কারণে রোহিঙ্গাদের প্রতি সহানুভূতিশীল। তবে কিছু স্থানীয় বাসিন্দা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন, কারণ রোহিঙ্গারা স্থানীয় সম্পদ ব্যবহার করেন এবং কখনো কখনো স্থানীয়দের সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েন।
২০২৩ সালের ডিসেম্বরে আচেহের এক কমিউনিটি হলে আশ্রিত ১০০ রোহিঙ্গা শরণার্থীকে স্থানান্তর করতে শতাধিক শিক্ষার্থী সেখানে বিক্ষোভ করে এবং তাদের জিনিসপত্র ভাঙচুর করে। জাতিসংঘ ইন্দোনেশিয়াকে দ্রুত শরণার্থীদের জন্য স্থায়ী ব্যবস্থা নিতে এবং তাদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে আহ্বান জানিয়েছে।