নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা এক শহীদ, এক বৃক্ষ কর্মসূচির আওতায় জুলাই বিপ্লবে জেলার ২১ জন শহীদের স্মরণে আজ ২১টি বকুল গাছ রোপণ করেছেন। জেলা প্রশাসন ও সামাজিক বনায়ন বিভাগের যৌথ আয়োজনে শহরের হাজীগঞ্জ এলাকায় বাংলাদেশের প্রথম ‘জুলাই শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ’ চত্বরে এই ব্যতিক্রমধর্মী বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।
এই সময় জেলা প্রশাসক জাহিদুল ইসলাম বলেন, বকুল ফুলের সৌরভের মতো বিকশিত হয়ে তাদের উদ্দেশ্যকে ধারণ করে দেশের উন্নয়নে কাজ করব, কাঙ্খিত বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করব। আমরা শহীদদের স্বপ্ন বাস্তবায়নে এগিয়ে যাবো।
তিনি আরও বলেন, নারায়ণগঞ্জ জেলায় জুলাই বিপ্লবে ২১ জন শহীদের স্মৃতি রক্ষায় ও জুলাই পুনর্জাগরণের অংশ হিসেবে ২১টি বৃক্ষ রোপণ করা হয়েছে। শহীদগণ যে কারণে শহীদ হয়েছেন, তাদের সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন করার প্রত্যয় ব্যক্ত করে তিনি বলেন, আমরা তাদের কাঙ্ক্ষিত বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করবো। তিনি জেলা প্রশাসনের সকল আয়োজনে শহীদ পরিবার পাশে থাকায় তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক জাহিদুল ইসলাম। এর আগে তিনি জুলাই বিপ্লবে শহীদ পরিবারের সদস্যদের ফুল দিয়ে বরণ করে নেন। তাদের খোঁজখবর নেন এবং সর্বদা তাদের পাশে থাকার আশ্বাস দেন।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন শহীদ মাহমুদুর রহমান খানের স্ত্রী ও সন্তান, শহীদ ফারহান ফাইয়াজের বাবা, শহীদ শফিকুলের মা, শহীদ মো. স্বজনের ভাই, শহীদ মো. সাইফুল হাসানের মা, শহীদ মো. মহসিনের স্ত্রী ও সন্তানসহ শহীদ পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. আলমগীর হুসাইন, সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ জাফর সাদিক চৌধুরী, নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান, সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট আবু আল ইউসুফ খান টিপু, জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মাশুকুল ইসলাম রাজিব, গণসংহতি আন্দোলনের নারায়ণগঞ্জ জেলা সমন্বয়কারী তরিকুল সুজন, নারায়ণগঞ্জ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্য সচিব জাবেদ আলম এবং সামাজিক বন বিভাগ নারায়ণগঞ্জের কর্মকর্তাবৃন্দ। এই ব্যতিক্রমী উদ্যোগের জন্য শহীদ পরিবারের সদস্যগণ জেলা প্রশাসকের ভূয়সী প্রশংসা করেন।
জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদদের আত্মত্যাগকে সম্মান জানিয়ে ‘এক শহীদ, এক বৃক্ষ’ কর্মসূচি হাতে নিয়েছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়। প্রতিজন শহীদের সম্মানে একটি করে বৃক্ষরোপণ করা হবে। ঢাকাসহ দেশের ৬৪ জেলায় এ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে বন অধিদপ্তর।
জুলাই পুনর্জাগরণ অনুষ্ঠানমালার অংশ হিসেবে শনিবার ৬৪টি জেলায় সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে এ বৃক্ষরোপণ করছে বন অধিদপ্তর। শহীদদের স্মরণে বিভিন্ন ফলদ, ওষধি, বনজ ও শোভাবর্ধনকারী গাছ লাগানো হচ্ছে।
জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে এ ধরনের একটি কর্মসূচির উদ্যোগ নেওয়া হয়। এরপর ২ জুলাই তাদের পক্ষ থেকে দেওয়া এক চিঠিতে এ কর্মসূচি বাস্তবায়নে বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতা চাওয়া হয়। এরপর মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এ কর্মসূচি বাস্তবায়নে বন অধিদপ্তরকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
Leave a Reply