1. info@www.tarangotv.com : TV :
শুক্রবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৫, ০৭:২৫ অপরাহ্ন

কলেজের প্রশাসনিক ভবনের কক্ষে সংসার পেতেছেন অধ্যক্ষ

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত: শনিবার, ১৮ অক্টোবর, ২০২৫
  • ১১ বার পড়া হয়েছে

কলেজের প্রশাসনিক ভবনের দোতলার একটি কক্ষের পর্দা সরালেই মনে হবে এটি যেন কোনো বসতবাড়ি। আসলে কক্ষটি সরকারি কলেজের প্রশাসনিক কাজের কক্ষ। সরকারি নির্দেশনা ও প্রশাসনিক নীতিমালা উপেক্ষা করে অধ্যক্ষ ওই কক্ষকে নিজের বাসস্থানে পরিণত করেছেন।

কলেজের একাধিক শিক্ষক ও কর্মচারী জানান, অধ্যক্ষ দীর্ঘদিন ধরে কলেজের প্রশাসনিক ভবনে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণ কক্ষে অবস্থান করছেন।

ঘটনাটি ঘটেছে কুড়িগ্রামের চিলমারী সরকারি ডিগ্রি কলেজে। অধ্যক্ষকের নাম প্রফেসর ড. মো. মজিবল হায়দার চৌধুরী। তিনি চলতি বছরের এপ্রিল মাস হতে প্রশাসনিক ভবনের দ্বিতীয় তলায় পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণ কক্ষে রাত্রীযাপন করে আসছেন। এতে পরীক্ষার সময় ভোগান্তির সম্মুখীন হতে হচ্ছে দায়িত্বে থাকা বাকি শিক্ষকদের।

অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, তিনি সপ্তাহের বুধবার রাতে তার নিজ বাড়িতে চলে যান এবং আসেন রোববার সকালে। প্রতি বৃহস্পতিবার তিনি ছুটিতে থাকেন। এছাড়া তিনি একাদশ শ্রেণির দুটি কক্ষের দেয়াল ভেঙে বড় করছেন।

তবে, সব অভিযোগ মিথ্যা জানিয়ে তিনি বলেন, কলেজের স্বার্থেই আমি একটি রুমে অবস্থান করছি।

কলেজটিতে গিয়ে দেখা গেছে, প্রশাসনিক ভবনের দ্বিতীয় তলায় পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণ কক্ষে বিছানা ও আসবাবপত্র রয়েছে। কক্ষে টানানো দড়িতে কাপড় ঝুলছে। টেবিলের ওপর প্লেট, জগ, ফ্যান। প্রথম দিকে কিছু দিন তিনি ওই খানে রান্না করেও খেতেন বলে জানা গেছে। তবে বর্তমানে এক কর্মচারীর বাড়ি হতে নিয়মিত খাবার আসায় রান্না করেন না। কলেজের কয়েকটি শ্রেণিকক্ষের তালা খুলে দেখা যায় দেয়াল ভাঙা।

শিক্ষক পরিষদের সম্পাদক প্রভাষক এ কে এম গোলাম ফারুক বলেন, কলেজ কক্ষের দেয়াল ভাঙার বিষয়ে আমি অবগত নই। আমাকে ভয়ভীতি দেখিয়ে রেজুলেশন লেখানো হয়েছে। অধ্যক্ষ স্যার আমাকে হুমকি দিয়েছেন, আপনার অবসরের কাগজপত্র কিন্ত আমাকেই স্বাক্ষর করতে হবে।

শিক্ষক পরিষদের কোষাধ্যক্ষ প্রভাষক জিয়াউর রহমান জিয়া বলেন, দেয়ালগুলো ভেঙে যে রুমগুলো বড় করা হয়েছে, এতে একাডেমি কাউন্সিলের অনুমতি দরকার। কিন্তু সেই অনুমতি নেওয়া হয়নি। উপস্থিতির স্বাক্ষরে রেজুলেশন লিখে দেখানো হয়েছে। আসলে দেয়াল ভাঙার বিষয়ে আমাদের কোনো মিটিংও হয়নি।

প্রভাষক এটিএম আতিকুর রহমান বলেন, কলেজে রাত্রিযাপন করার কোনো আইন নেই। তাছাড়া সরকার প্রতিমাসে বাড়ি ভাড়া দেয়। অধ্যক্ষ স্যার যে রুমে অবস্থান করছেন সেটি পরীক্ষার সময় কন্ট্রোল রুম হিসাবে ব্যবহার করা হয়। তিনি রুমে অবস্থান করায় পরীক্ষার সময় আমাদের নানান জটিলতায় পরতে হচ্ছে।

কলেজের নৈশপ্রহরী লাল মিয়া বলেন, স্যার ওপরে একটা রুমে থাকেন। তিনি বুধবার রাতে বাড়িতে যান, আর রোববার সকালে যথাসময়ে এসে কলেজ করেন। আগে তো রুমেই রান্না করে খেতেন। এখন আমি আমার বাড়ি থেকে খাবার দিয়ে আসি।

তবে অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. মো. মজিবল হায়দার চৌধুরী এ বিষয়ে ক্যামেরার সামনে বেশি কথা বলতে রাজি হয়নি। শুধু জানিয়েছেন, কলেজের স্বার্থে তিনি একটি কক্ষে অনেক কষ্ট করে থাকেন। বাকি অভিযোগগুলো অস্বীকার করেছেন। ছুটির দরখাস্ত সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে শুধু ডিজি স্যার প্রশ্ন করার অধিকার রাখেন।

আরো সংবাদ পড়ুন
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত, আমাদের প্রকাশিত সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার অপরাধ।
ওয়েবসাইট ডিজাইন : ইয়োলো হোস্ট