সুন্দরবনের কোলঘেঁষা শহর খুলনার ১৪৪তম জন্মদিন আজ (২৫ এপ্রিল)। দীর্ঘদিন ধরে বৃহত্তর খুলনা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটির উদ্যোগে নগরীতে নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে জমকালোভাবে জন্মদিন পালন করা হয়।
এবারও জন্মদিন উপলক্ষ্যে শুক্রবার দিনব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচির আয়োজন করেছে বৃহত্তর খুলনা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটি। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা, স্মরণিকা প্রকাশ, খুলনা মেজবানী ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে রূপসা ও ভৈরব নদীর তীরে খুলনা শিল্পনগরীর অবস্থান। ঢাকা ও চট্টগ্রামের পর বাংলাদেশের তৃতীয় বৃহত্তম শহর খুলনা। দেশের প্রাচীনতম নদী বন্দরগুলোর মধ্যে খুলনা অন্যতম।
১৮৪২ সালে ভৈরব-রূপসাবিধৌত নয়াবাদ থানা ও কিসমত খুলনাকে কেন্দ্র করে নতুন জেলার সদর দপ্তর স্থাপিত হয় খুলনায়। খুলনা মহকুমা প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর ব্রিটিশদের প্রশাসনিক এলাকা বৃদ্ধি ও ভৌগোলিক অবস্থার কারণে খুলনা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে।
মাত্র ৪০ বছরের ব্যবধানে ৪ হাজার ৬৩০ বর্গমাইল এলাকা, ৪৩ হাজার ৫০০ জনসংখ্যা অধ্যুষিত খুলনা, বাগেরহাট ও সাতক্ষীরাকে নিয়ে ১৮৮২ সালের ২৫ এপ্রিল গেজেট নোটিফিকেশনের মাধ্যমে খুলনা জেলা প্রতিষ্ঠিত হয়। আর সেই পরিসংখ্যান অনুযায়ী খুলনার ১৪৪তম জন্মদিন আজ। এর আগে খুলনা ছিল যশোর জেলার মহকুমা। ব্রিটিশ শাসক ডাব্লিউ এম ক্লে জেলার প্রথম ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
খুলনার সংক্ষিপ্ত ইতিহাস থেকে জানা যায়, খুলনা নামকরণের উৎপত্তি নিয়ে মতভেদ রয়েছে। তবে সবচেয়ে বেশি আলোচিত মত হচ্ছে— ধনপতি সওদাগরের দ্বিতীয় স্ত্রী খুলনার নামে নির্মিত ‘খুলনেশ্বরী মন্দির’ থেকে খুলনা নামের উৎপত্তি।
১৭৬৬ সালে ‘ফলমাউথ’ জাহাজের নাবিকদের উদ্ধার করা রেকর্ডে লিখিত ‘Culnea’ শব্দ থেকে খুলনার উৎপত্তি। বিজ্ঞজনের মতে ‘কিসমত খুলনা’ মৌজা থেকে খুলনা নামের উৎপত্তি হয়েছে। ব্রিটিশ আমলের মানচিত্রে লিখিত Jessore-Culna শব্দ থেকে খুলনা এসেছে বলেও অনেকের ধারণা।
বৃহত্তর খুলনা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটির সভাপতি শেখ আশরাফ উজ জামান ঢাকা পোস্টকে বলেন, খুলনাবাসীর আনন্দের দিন আজ। এই দিনটিকে স্মরণে রাখতে এবং তরুণ প্রজন্মকে দিনটি সম্পর্কে অবগত করতে প্রতিবছর আমরা নানা আয়োজন করে থাকি। এবারও নানা কর্মসূচি পালন করছি। শোভাযাত্রার মধ্যদিয়ে খুলনার ইতিহাস-ঐতিহ্য তুলে ধরা হবে। এখানে স্থান পাবে ঢাক-ঢোল, আদি মানবের সাজসজ্জাসহ নানা জিনিসপত্র।
সংগঠনের নেতা অধ্যাপক মো. আবুল বাশার ঢাকা পোস্টকে বলেন, দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালায় আজ সকাল ১০টায় শিববাড়ির মোড়ে আয়োজিত সমাবেশ উদ্বোধনের পর নগরীতে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হবে। দুপুরে হবে খুলনার মেজবানী।