নৃশংসতা মধ্য দুপুরে শহরের প্রাণকেন্দ্রে
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুপুর আনুমানিক ১টার দিকে জয়দেবপুর মোড় এলাকায় একটি দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন সাংবাদিক তুহিন। হঠাৎ মুখোশ পরা ৪-৫ জন দুর্বৃত্ত তার ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে ফেলে রেখে যায়। আশপাশের মানুষ ভয়ে এগিয়ে আসতে পারেনি। পরে স্থানীয়রা রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
সংবাদের জেরে হত্যার অভিযোগ
নিহতের সহকর্মী ও পরিবার সূত্রে জানা গেছে, সাংবাদিক তুহিন সম্প্রতি গাজীপুর মহানগরের কিছু চিহ্নিত চাঁদাবাজ চক্রের বিরুদ্ধে একাধিক অনুসন্ধানমূলক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিলেন। এসব প্রতিবেদন সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক আলোড়ন তোলে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওই চক্রটি তাকে নানা সময় হুমকি দিয়ে আসছিল।
পরিবারের আহাজারি ও সাংবাদিক সমাজের ক্ষোভ
সাংবাদিক তুহিনের অকাল মৃত্যুতে পরিবারে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তার স্ত্রী, সন্তান ও বৃদ্ধ মা-বাবা বারবার জ্ঞান হারিয়ে ফেলছেন। তারা হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
এদিকে গাজীপুর সাংবাদিক ইউনিয়ন, প্রেস ক্লাব, রিপোর্টার্স ইউনিটি ও বিভিন্ন গণমাধ্যম সংগঠন এ হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। এক যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়,
“একজন সাহসী সংবাদকর্মীকে এভাবে দিবালোকে হত্যা করা গোটা গণমাধ্যমের জন্য একটি ভয়ংকর বার্তা। আমরা এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাই।”
প্রশাসনের বক্তব্য গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের মুখপাত্র জানান,
ঘটনাটি অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে। ইতিমধ্যে ঘটনাস্থলের আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। জড়িতদের শনাক্ত করতে একটি বিশেষ তদন্ত টিম কাজ শুরু করেছে।”
নিরাপত্তাহীনতায় সংবাদকর্মীরা সাংবাদিক হত্যার এ ঘটনায় স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ের সাংবাদিকদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও শঙ্কা বিরাজ করছে। তারা বলছেন,
এভাবে একের পর এক সাংবাদিক খুন হওয়া সত্ত্বেও অপরাধীরা বারবার পার পেয়ে যাওয়ায় দেশে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা মারাত্মকভাবে হুমকির মুখে।”
সাংবাদিক তুহিনের মৃত্যুতে ‘প্রতিদিনের কাগজ’ পরিবার গভীর শোক প্রকাশ করেছে এবং তার আত্মার মাগফিরাত কামনা করছে।
Leave a Reply