1. tv@tarangotv.com : তরঙ্গ টিভি : তরঙ্গ টিভি
  2. info@www.tarangotv.com : তরঙ্গ টিভি :
মঙ্গলবার, ২২ জুলাই ২০২৫, ০৪:০৮ অপরাহ্ন

চিকিৎসার অভাবে মারা গেছেন জনপ্রিয় এ অভিনেতা

প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত: শনিবার, ১৯ জুলাই, ২০২৫
  • ১১ বার পড়া হয়েছে

ভারতীয় চলচ্চিত্রের সুপরিচিত মুখ অভিনেতা ফিশ ভেঙ্কট আর নেই। দীর্ঘদিন ধরে কিডনি ও লিভার জটিলতায় ভুগে গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় হায়দরাবাদের একটি বেসরকারি হাসপাতালে শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। তাঁর বয়স হয়েছিল ৫৩ বছর। স্থানীয় তেলেগু গণমাধ্যম, হিন্দু ও হিন্দুস্তান টাইমস তাঁর মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে। তাদের সংবাদ অনুযায়ী, দীর্ঘদিন অসুস্থ থাকা অবস্থায় যথাযথ চিকিৎসা পাননি একসময়ের ব্যস্ত এ অভিনেতা। বরং চিকিৎসার আর্থিক সহায়তায় প্রতারণার শিকার হয়েছে পরিবার।

প্রকৃত নাম ভেঙ্কট রাজ হলেও চলচ্চিত্রপ্রেমীরা তাঁকে ‘ফিশ ভেঙ্কট’ নামেই চিনতেন। স্ত্রী ও তিন সন্তান রেখে গেছেন তিনি। তাঁর মৃত্যুর খবরে শোকের ছায়া নেমে এসেছে দক্ষিণ ভারতীয় চলচ্চিত্র অঙ্গনে।

অনেক দিন ধরে অসুস্থ ছিলেন অভিনেতা। কয়েক সপ্তাহ আগে ফিশ ভেঙ্কটের শারীরিক অবস্থা দ্রুত অবনতির দিকে যায়। চিকিৎসকেরা কিডনি প্রতিস্থাপনের পরামর্শ দেন। এ জন্য প্রয়োজন হয় প্রায় ৫০ লাখ রুপি। ভেঙ্কটের মেয়ে শ্রাবন্তী এক ভিডিও বার্তায় জনসাধারণের কাছে আর্থিক সহায়তার আবেদন জানান। তিনি বলেন, ‘ড্যাডি একদম ভালো নেই। খুবই সিরিয়াস অবস্থায় আইসিইউতে আছেন। কিডনি ট্রান্সপ্ল্যান্ট জরুরি। প্রায় ৫০ লাখ রুপি লাগবে।’

১৯৭১ সালে জন্ম নেওয়া ফিশ ভেঙ্কটের চলচ্চিত্রজীবন শুরু হয় ২০০১ সালে
১৯৭১ সালে জন্ম নেওয়া ফিশ ভেঙ্কটের চলচ্চিত্রজীবন শুরু হয় ২০০১ সালেএক্স থেকে

এ সময় শ্রাবন্তী দাবি করেন, জনপ্রিয় তেলেগু অভিনেতা প্রভাসের এক সহকারী ফোন করে জানিয়েছেন, ভেঙ্কটের কিডনি প্রতিস্থাপনের ব্যয় তিনি বহন করবেন। সেই সহকারী অনুরোধ করেছিলেন, প্রতিস্থাপনের দিন যেন জানানো হয়।
তবে কয়েক দিন পর ভেঙ্কট পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, প্রভাসের পক্ষ থেকে এমন কোনো সহায়তা তারা পায়নি। বরং প্রতারণার শিকার হয়েছেন। সুমন টিভিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ভেঙ্কটের এক আত্মীয় বলেন, ‘এমন কিছু ঘটেনি। কেউ একজন প্রভাস আন্নার সহকারী সেজে ফোন করেছিলেন। পরে জানতে পারি, সেটি ভুয়া। প্রভাস জানেনই না, এমন কিছু ঘটছে। এখন পর্যন্ত আমরা কারও কাছ থেকে সাহায্য পাইনি, বরং আমরা প্রতারণার শিকার হয়েছি।’

১৯৭১ সালে জন্ম নেওয়া ফিশ ভেঙ্কটের চলচ্চিত্রজীবন শুরু হয় ২০০১ সালে, পাওয়ান কল্যাণ অভিনীত ‘খুশি’ সিনেমার একটি ছোট চরিত্র দিয়ে। ২০০২ সালে মুক্তি পাওয়া ‘আদি’ ছবিতেও কাজ করেন তিনি। এরপর ‘বান্নি’, ‘ধী’, ‘অধুর্স’, ‘ডিজে টিল্লু’, ‘মা উইন্থা গাধা বিনুমা’সহ বহু তেলেগু ছবিতে তিনি অভিনয় করে দর্শকদের হাসিয়েছেন। হাস্যরসাত্মক চরিত্রে তাঁর সময়জ্ঞান, সংলাপ বলার ধরন ও শরীরী ভাষা দর্শকদের কাছে আলাদা পরিচিতি পায়। খল চরিত্রেও অভিনয় করেছেন এ অভিনেতা।
তাঁর সর্বশেষ মুক্তিপ্রাপ্ত চলচ্চিত্র ‘কফি উইথ আ কিলার’। যেখানে তিনি ছিলেন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায়। করোনা মহামারির সময়ও তিনি কাজ থেকে বিরতি নেননি। সিদ্ধু জোনালাগাড্ডার সঙ্গে ‘ডিজে টিল্লু’এবং ‘মা উইন্থা গাধা বিনুমা’ ছবিতে তাঁর পারফরম্যান্স প্রশংসিত হয়।

তেলেগু সিনেমার কৌতুকভিত্তিক চরিত্রগুলোর মধ্যে ফিশ ভেঙ্কট নিজের একটি ঘরানা তৈরি করেছিলেন। তাঁর প্রয়াণ তেলেগু ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির জন্য অপূরণীয় ক্ষতি বলে মনে করছেন সহশিল্পীরা। দীর্ঘ সময় সিনেমার পর্দায় দর্শকদের হাসির খোরাক জোগানো এই অভিনেতার মৃত্যুতে তেলেগু সিনেপ্রেমীরা যেমন শোকাহত, তেমনি তাঁর পরিবারের সামনে এখন কঠিন বাস্তবতার চ্যালেঞ্জ বলে মনে করেছেন সহশিল্পীরা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ নিয়ে বক্তব্য দিয়েছেন বেশ কয়েকজন শিল্পী। তাদের ভাষ্যে, ভেঙ্কটের মতো একজন প্রতিভাবান অভিনেতার চিকিৎসা খরচ তুলতে গিয়ে প্রতারণার শিকার হওয়া কেবল দুঃখজনকই নয়, বরং ভারতীয় বিনোদনজগতের অদৃশ্য বাস্তবতাকে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়।

Leave a Reply

আরো সংবাদ পড়ুন
© তরঙ্গ টিভি
ওয়েবসাইট ডিজাইন : ইয়োলো হোস্ট