বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ছাত্র-জনতা প্রাণ দিয়ে জানিয়ে দিয়ে গেছে এই দেশ ফ্যাসিস্টদের না। এই দেশ দানবদের নয়। এই দেশ রক্ত পিপাসুদের নয়।
শুক্রবার (১৮ জুলাই) বিকেলে বরিশাল জেলা ও মহানগর বিএনপি আয়োজিত শোক র্যালি পূর্ববর্তী সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, বেগম জিয়া বাইরে থাকা মানে হাসিনার বিপদ, দেশের মানুষের স্বাধীনতা। সেজন্যই তাকে বন্দি করে রেখেছিল আওয়ামী লীগ। ১৬ বছর পর ছাত্ররা রাস্তায় নেমে আসলো। এই আন্দোলনের পটভূমি এই আন্দোলনের মাঠ তৈরি করেছেন আমাদের প্রিয় নেতা তারেক রহমান। তিনি সকল নেতাকর্মীদের আহ্বান জানিয়েছেন ছাত্রদের কোটাবিরোধী আন্দোলনই হবে গণতন্ত্রের ফাইনাল খেলা। এই চূড়ান্ত সংগ্রামের ঘোষণা দিয়েছিলেন তারেক রহমান।
তিনি আরও বলেন, ছাত্ররা একটি রাজনৈতিক দল গঠন করেছেন। তারা ঘোষণা দিয়েছেন মার্চ ফর গোপালগঞ্জ। এই ঘোষণার কথা শুনে শেখ হাসিনা তার নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন- যারা গোপালগঞ্জ যাবে তাদের দুনিয়া থেকে সরিয়ে দেবে। এই কারণে এনসিপির ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েছিল।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার জন্য কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে আমাদের লড়াই। কিন্তু সেই লড়াইয়ের মধ্যে কেন আজ বিভেদ? এককভাবে কিছু করা যায় না। সম্মিলিতভাবে আমাদের শক্তি যা ছিল সেটি প্রদর্শন করলে কোনো পতিত স্বৈরাচার সাহস পেত না কিছু করার জন্য। কিন্তু আজকে বিএনপিকে টার্গেট করে নানান অপপ্রচার, কুৎসা দিয়ে ভিন্ন পরিস্থিতি তৈরি করছেন। কিছু লোক অপপ্রচার চালালেন বিএনপির বিরুদ্ধে। দশ হাজার মাইল দূরে তারেক রহমান, তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছেন। আপনারা সরকারকে কিছু বলেন না, প্রশাসনকে কিছু বলেন না। সন্ত্রাসীদের ধরবে কে, রাজনৈতিক দল নাকি পুলিশ? তাদেরকে কিছু না বলে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে কেন আপনারা অপপ্রচার চালাচ্ছেন। উদ্দেশ্যতো ভালো নয়। আপনাদের উদ্দেশ্য যদি ভালো হতো তাহলে পতিত স্বৈরাচার সাহস পেত না।
তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনা বাংলাদেশ চায় না। এদেশের শান্তিও চায় না, গণতন্ত্র চায় না, কথা বলার স্বাধীনতা চায় না। ও চায় রক্ত, ও চায় রাজত্ব, ও চায় রাষ্ট্র ও চায় লাশ। সে বাংলাদেশকে মনে করে সোনার খনি। সেই খনি তার ছেলেমেয়ে, ভাগিনা-ভাগনি, বোনসহ আত্মীয়-স্বজন মিলে পাচার করেছে। বাংলাদেশের ইঁদুরের গর্ত থেকে শেখ হাসিনার সম্পত্তি বেরিয়ে আসছে একটার পর একটা।
রিজভী বলেন, সোনার ছেলেরাই গোপালগঞ্জে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়েছে। নিরীহ মানুষকে ভাতের অধিকারের পরিবর্তে সন্ত্রাসী পরিবেশ উপহার দিচ্ছে ওই আওয়ামী সন্ত্রাসীরা। তাদের বুঝতে হবে মানুষ এখন আর রক্ত চক্ষুকে ভয় পায় না। তারা জানে কীভাবে লড়াই করে বাঁচতে হবে। এদেশের মানুষ রক্ত দিতে জানে, ঠিক তেমনি রক্ত নিতেও পারে। তাই সাধারণ মানুষের বাঁচার অধিকারে হস্তক্ষেপ করবেন না। ৫ আগস্টের মতো অভ্যুত্থান থেকে শিক্ষা নিন।
কর্মসূচির উদ্বোধন করেন জুলাই আগস্ট গণঅভ্যুত্থান বর্ষপূর্তি উদযাপন কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক ড. মোর্শেদ হাসান খান। এ সময় বরিশাল মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান ফারুক, সদস্য সচিব জিয়া উদ্দিন সিকদার, জেলার আহ্বায়ক আবুল হোসেন, সদস্য সচিব আবুল কালাম শাহীনসহ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
বিকেল সাড়ে ৪টায় অনুষ্ঠান শুরু হলেও ৩টা থেকে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে নেতৃবৃন্দ সভাস্থলে আসেন।
Leave a Reply