বাংলাদেশে ভারতীয় আধিপত্যবাদ, আওয়ামী লীগের অপরাজনীতি চলবে না বলে হুশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) সহ-সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার রাশেদ প্রধান।
অর্ন্তবর্ত সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, প্রয়োজন বোধ হলে আপনারা একটা গণভোট দেন। গণভোট তো নতুন কোনো শব্দ নয়। জিয়াউর রহমানের সময় কি গণভোট হয় নাই? এখন করলে আপত্তিটা কোথা থেকে আসে? বাংলাদেশের মানুষ দীর্ঘদিন ভোট দেয় নাই। এই গণভোটের মাধ্যমে এই ভোট দেওয়ার চর্চাটাও করে আসি। ভোট কি করে দিতে হয় তাই তো ভুলে গেছি। গণভোটটা দিতে গিয়ে সিদ্ধান্ত হোক, তারপর জাতীয় নির্বাচন দেন কারো কোনো আপত্তি থাকার কথা না।
জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে রোববার (১৭ আগস্ট) বিকাল ৩টায় রাজধানী ঢাকার রমনাস্থ ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে আয়োজিত জুলাই জাতীয় ঘোষণাপত্র এবং জুলাই জাতীয় সনদ-এর আইনগত স্বীকৃতি প্রদান ও আমাদের করণীয় শীর্ষক জাতীয় সেমিনারে প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে এসব বলেন তিনি।
রাশেদ প্রধান বলেন, আগামীর বাংলাদেশ স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশ। নতুন যুদ্ধ আসতে যাচ্ছে ঘোষণা দিলাম তৈরি থাকেন। অত্যন্ত হতাশ লাগছে যে, দিন দিন জুলাইকে বিক্রি করে দেওয়ার ষড়যন্ত্র চলছে।
তিনি হতাশা প্রকাশ করে বলেন, ‘আমি হতাশ এই জুলাই অভ্যুত্থানের প্রথম শহীদ আবু সাঈদকে বিক্রি করে দেওয়া শেষ। এখন শহীদ আবু সাঈদ এর কবরের পোকামাকড় পিঁপড়া আছে তাদেরকেও ধরে ধরে বিক্রি করে দেওয়া হচ্ছে।’
একটি দলের মতামতকে গ্রাহ্য করা হবে না উল্লেখ করে রাশেদ প্রধান বলেন, জনগণের সিদ্ধান্তে জনগণের গণঅভ্যুত্থানে জনগণের বিপ্লবের যে শেখ হাসিনা দিল্লি পালিয়ে গিয়েছিল, জনগণের সিদ্ধান্তই যে অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করা হয়েছে, সেই অন্তর্বর্তী সরকারকে দেশ পরিচালনার জন্য কোনো নির্দিষ্ট দলের মতামত মেনে নেওয়াটা জনগণ মেনে নেবে না৷
তিনি বলেন, কোনো নির্দিষ্ট দলের ম্যান্ডেট পূরণের জন্য বাংলার জনগণ অন্তর্বর্তী সরকারকে গ্রহণ করে নাই। জুলাই ঘোষণা আমরা কম বেশি সবাই পড়েছি। আমার কাছে একটা জগাখিচুড়ির মতো লেগেছে। এই জুলাই সনদ পাঠ করার জন্য এক বছর কেন লেগেছে এটাই এখন আমাদের জাতির বিবেকের কাছে প্রশ্ন।
ইঞ্জিনিয়ার রাশেদ প্রধান বলেন, সামনে আসতে চাচ্ছে জুলাই সনদ। যার আইনি ভিত্তি, সাংবিধানিক ভিত্তি কিভাবে হবে তা জানিনা। পূর্ববর্তী স্বৈরাচারদের মতো আগামীতে নতুন স্বৈরাচার এসে যদি ঘোষণা করে জুলাই সনদকে আমরা মানি না তখন আমরা কি করবো? তার পূর্বেই অর্থাৎ নির্বাচনের পূর্বেই যেই জনগণের সিদ্ধান্ত নিয়ে শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগকে বিতাড়িত করেছিল সেই জনগণের সিদ্ধান্তেই জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি দিতে হবে, এর কোনো বিকল্প নেই।
রাশেদ প্রধান বিএনপিকে ইঙ্গিত করে পাল্টা অভিযোগ উত্থাপন করে বলেন, ‘কোনো কিছু বললেই বলেন নির্বাচন পেছানোর ষড়যন্ত্র চলছে। কোনো কিছু বললেই আপনারা বলেন, সবকিছু সমাধান নাকি জাতীয় নির্বাচন। আমি তো গণহত্যাকারী ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা ও তার দোসরদের বিচারের সমাধান তো এখনো দেখতে পাই নাই। আমি তো এখনো সন্ত্রাসী সংগঠন আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করণ দেখতে পাইনাই। বাংলার মাটিতে এখনো ভারতীয় আধিপত্য নিশ্চিহ্ন হতে দেখি নাই। এখন চারপাশে র’এর এজেন্টরা ঘুরে বেড়াচ্ছে। এরকম একটা সময়ে এসে কোনো কিছু বললেই আপনারা বলেন ষড়যন্ত্র হচ্ছে। আর নির্বাচন দিলেই নাকি সব সমাধান হয়ে যাবে।
তিনি বলেন, বাংলার জনগণ একবার রক্ত দিয়েছে, রাস্তায় নেমেছে, প্রয়োজনে আর একবার রক্ত দেবে রাস্তায় নামবে কিন্তু নতুন কোনো স্বৈরাচার ফ্যাসিস্ট সৃষ্টি হতে দেব না। কথাবার্তা পরিষ্কার, জাতীয় নির্বাচনের পূর্বেই জুলাই সনদের আইনি বৈধতা লাগবে।
Leave a Reply