1. talukdermdsohel27@gmail.com : Md Sohel : Md Sohel
  2. tv@tarangotv.com : তরঙ্গ টিভি : তরঙ্গ টিভি
  3. info@www.tarangotv.com : তরঙ্গ টিভি :
মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫, ০২:৩০ পূর্বাহ্ন

তীর রক্ষা বাঁধ ঘেঁষে তোলা হচ্ছে বালু

প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত: শুক্রবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৫
  • ৫ বার পড়া হয়েছে

নীলফামারীর ডিমলায় তিস্তা নদীর তীর রক্ষায় জিও ব্যাগ ফেলার কাজ করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। তারই পাশে নদী থেকে অবৈধ ড্রেজার দিয়ে বালু তুলে জিও ব্যাগ ভরাটের কাজ করা হচ্ছে। যার ফলে নদীর তীর হুমকির মুখে পড়ার পাশাপাশি পাড়ের ফসলি জমি নদীতে বিলীন হচ্ছে। ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে তিস্তা ব্যারাজসহ আশপাশের গ্রামের ঘরবাড়ি, ফসলি জমি, বাঁধসহ বিভিন্ন স্থাপনা।

স্থানীয়দের অভিযোগ, ভাঙন এলাকায় বালু উত্তোলন করা হলেও তা বন্ধে কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না পাউবো ও স্থানীয় প্রশাসন। অবৈধভাবে বালু তোলায় ভেস্তে যেতে পারে সরকারের কোটি কোটি টাকার এ প্রকল্প।

পাউবো সূত্রে জানা গেছে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে তিস্তা নদীর তীর রক্ষায় ২০ কোটি টাকার প্রকল্প চলমান। এর মধ্যে ডিমলা উপজেলার খালিশা চাপানি ইউনিয়নের বাইশপুকুর এলাকায় ১০৭০ মিটার তীরে জিও ব্যাগ ফেলার প্রকল্প চলমান। এতে ৬ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। চারটি প্যাকেজে ভাগ করে ঠিকাদার নিয়োগ করে পাউবো। তবে কাজ সম্পন্ন করছে সাব ঠিকাদার। এ ছাড়া জরুরি কাজের নামে দরপত্র ছাড়াই ঝুনাগাছ চাপানির ভেণ্ডাবাড়ী ও সোনাখুলি স্পার বাঁধ রক্ষায় ১ কোটি ২৪ লাখ টাকা ব্যয়ে জিও ব্যাগ ফেলছে ডালিয়া পাউবো।

এর আগে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে এসব স্পার বাঁধ রক্ষায় দুটি প্রকল্পে সাড়ে ৫ কোটি টাকা ব্যয়ে জিও ব্যাগ ফেলা হয়। জিও ব্যাগ ভরাট করা হয়েছিল বাঁধের নিচের বালু তুলে। তবে বছর না ঘুরতেই জিও ব্যাগ ধসে পড়ে নদীতে বিলীন হয়েছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার বাইশপুকুর, ভেণ্ডাবাড়ী ও সোনাখুলি স্পার বাঁধের নিচে ভাঙন এলাকা থেকে বালু তুলে ভরা হচ্ছে ব্যাগে। বাঁধ থেকে ৩০ মিটার দূরত্বে নদীর ভাঙন ও ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন পাঁচটি ড্রেজার মেশিনে ১০ ইঞ্চি পাইপ যুক্ত করে বালু তোলা হচ্ছে। যদিও এমন মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলনে উচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। এমনকি নদীর তীর ভাঙনের শিকার হওয়ার আশঙ্কা থাকলেও বালু তোলা নিষেধ। তবে এরপরও উত্তোলন করা পলিমিশ্রিত চিকন বালু দিয়ে পাশেই ভরা হচ্ছে জিও ব্যাগে। অথচ শুষ্ক ও মোটা বালু দিয়ে জিও ব্যাগ ভরাটের নিয়ম রয়েছে।

কর্মরত শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তারা কাজের ঠিকাদারদের অধীনে প্রায় ১০ দিন ধরে বালু তোলার কাজ করছেন। আর স্থানীয়দের অভিযোগ, ঠিকাদার অধিক মুনাফার লোভে কোনো আইন না মেনে নদীর ভাঙন যেখানে বেশি, সেখান থেকেই বালু উত্তোলন করছে। এর ফলে জিও ব্যাগ কোনো কাজে আসবে না। প্রশাসন তা বন্ধও করে না। এ ক্ষেত্রে পাউবো কর্মকর্তাদের যোগসাজশ থাকার সন্দেহ করছেন তারা।

সোনাখুলি ভাঙনকবলিত এলাকার বাসিন্দা সামছুল হক বলেন, ভাঙন প্রতিরোধে প্রতিবছর বড় বড় বালুর বস্তা ফেলা হয় নদীতে। নদীর তলদেশে যেখানে ভাঙনটা হয়, সেখানে মেশিন দিয়ে বালু তুলে আবার সেখানেই বালুর বস্তা ফেলে প্রতিরোধ তৈরি করা হয়। এই প্রতিরোধব্যবস্থা শুধু পানিতে টাকা ফেলা ছাড়া কিছুই না।

একই এলাকার তরিকুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, বানের জলে এসব বালুর বস্তা নদীর গভীরে চলে যায়। আর একই প্রক্রিয়ায় বছরের পর বছর কাজ হচ্ছে। সরকারি টাকা পানিতে যায়, অথচ ভাঙন রোধে তেমন কাজে আসে না।

বাইশপুকুর এলাকার দেলোয়ার হোসেন বলেন, বস্তার মধ্যে মোটা বালু দেওয়ার কথা, কিন্তু ঠিকাদারেরা দিচ্ছেন নদীর চিকন বালু-মাটি। মোটা বালু দিয়ে নদীর মধ্যে বস্তা ফেললে তা শক্ত ও মজবুত হতো।

তিস্তা বাঁচাও নদী বাঁচাও আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সদস্য সোহেল হাসান বলেন, নদী এলাকায় বালু উত্তোলন করলে তা হবে আত্মঘাতী। এতে নদীর তলদেশে বড় গর্তের সৃষ্টি হচ্ছে। সে গর্তে নদীর তীর ধসে ভাঙন সৃষ্টি হচ্ছে। বাঁধ টিকিয়ে রাখতে অর্থ খরচ করা হচ্ছে ঠিকই তবে বালু উত্তোলন বন্ধ না হলে এ অর্থ ব্যয় করে কোনো কাজে আসবে না।

এ বিষয়ে ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী অমিতাভ চৌধুরী বলেন, ভাঙন এলাকায় মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলনের সুযোগ নেই। ড্রেজার মেশিন বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ নায়িরুজ্জামান বলেন, ইউএনওকে এগুলো বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছি। এ ধরনের অবৈধ কার্যক্রম আমরা কোনোভাবেই প্রশ্রয় দেব না। কেউ নির্দেশনা না মানলে আইনি ব্যবস্থা নেব। আর পাউবোর কর্মকর্তাকে বলব এভাবে যাতে টাকার অপচয় করা না হয়। বালু যেখান থেকে তুলবে সেখানেই জিও ব্যাগ ফেলার মানে হয় না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ পড়ুন
© তরঙ্গ টিভি
ওয়েবসাইট ডিজাইন : ইয়োলো হোস্ট