ঢাকার ধামরাইয়ে এক গৃহবধূ ধর্ষণের ঘটনায় এক সালিশ অনুষ্ঠিত হয়। এই সালিশে ধর্ষককে এক লাখ বিশ হাজার টাকা ও দুই লাখ ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। আর সেই টাকা পকেটস্থ হয়েছে মাতাব্বরদের। জরিমানার এক টাকাও পায়নি ধর্ষিতা ও ধর্ষিতার পরিবার।
শনিবার সকালে এ সালিশবৈঠকের ঘটনাটি ঘটেছে ধামরাই উপজেলার কুসুরা ইউনিয়নের নবগ্রাম বাজারস্থ রজ্জব আলীর বাড়িতে। এর আগে শুক্রবার দিবাগত রাতে ওই বাড়িতে গৃহবধূ ধর্ষণের ঘটনাটি ঘটেছে বলে জানা গেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানাই, উপজেলার বালিয়া ইউনিয়নের দুনিগ্রাম এলাকার বাসিন্দা মরহুম শিকদারের ছেলে রাজমিস্ত্রি জাহাঙ্গীর আলম একই এলাকার ইয়াদ আলীর মেয়ে ও বাসতা গ্রামের গৃহবধূকে বিয়ের প্রলোভনে প্রলুব্ধ করে নবগ্রাম বাজারস্থ মোহাম্মদ রজ্জব আলীর বাড়িতে একটি রুমের ভেতর নিয়ে ধর্ষণ করে শুক্রবার দিনগত রাত দশটার দিকে। স্থানীয় জনতার হাতে এ সময় তারা আটক হলে জাহাঙ্গীর আলমের ভাগ্নে বিজিবি সদস্য মোঃ জসিম উদ্দিন এর অনুরোধে তাদেরকে ছেড়ে দেয়া হয় শনিবার সালিশবৈঠকের প্রতিশ্রুতিতে।
এরই ধারাবাহিকতায় ওই বাড়িতে শনিবার সকাল ১১টার দিকে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এ সালিশবৈঠকে জরিমানার নগদ ১ লাখ ২০ হাজার টাকা ও ব্যাংকের চেকের মাধ্যমে ২ লাখ ২০ হাজার টাকার একটি চেক ধর্ষকের কাছ থেকে হাতিয়ে নেন সালিশকারী মাতব্বর নবগ্রাম এলাকার বাসিন্দা মোঃ সোলায়মান হোসেন গংগা।
এ ব্যাপারে নবগ্রাম বাজার কমিটির সভাপতি বিএনপি নেতা হোসেন বলেন, ধর্ষণের ঘটনা সালিশবৈঠক আপসযোগ্য নয়। এটা বৈঠকে মিটমাট করা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। অপরদিকে ব্যাংকের চেক এর মাধ্যমে ২ লাখ ২০ হাজার টাকা ও নগদ এক লাখ বিশ হাজার টাকা সালিশকারী মাতব্বরা দর্শকের কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়ে তা পকেটস্থ করেছে। এক টাকাও দেয়া হয়নি ধর্ষিতা কিংবা ধর্ষিতার পরিবারকে।
ধর্ষিতা ওই গৃহবধূ বলেন, জাহাঙ্গীর আলম আমাকে বিয়ে করার আশ্বাস দিয়ে আমাকে ধর্ষণ করে। পরে এখানে লোকজন তাকে আটক করে। এ ঘটনায় প্রশাসন জরিমানা করলেও তার একটা টাকাও আমাকে দেয়া হয়নি।
এ ব্যাপারে কাউলিপাড়া বাজার পুলিশ কেন্দ্রের ইনচার্জ পরিদর্শক মোহাম্মদ নুরে আলম সিদ্দিকী বলেন, ধর্ষণের ঘটনায় একটি অভিযোগ পাওয়া গেছে। মীমাংসার কথা এখন পর্যন্ত কেউ আমাকে জানাইনি। তদন্ত সাপেক্ষে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।