৩ জুলাই ২০২৫, পদ্মা নদীর সাড়াঘাট এলাকায় একটি সুসংগঠিত চক্র হাইকোর্টের একটি আদেশকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে ব্যাপক আকারে অবৈধ বালু উত্তোলন চালিয়ে যাচ্ছে। ঈশ্বরদী পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া পিন্টুর নেতৃত্বাধীন এই চক্রের তৎপরতায় হুমকির মুখে পড়েছে দেশের গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রীয় স্থাপনা—ঐতিহাসিক হার্ডিং ব্রিজ ও লালন শাহ সেতু।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কারামুক্তির পর জাকারিয়া পিন্টু তার ভাই মেহেদী হাসান, সাবেক যুবদল নেতা সুলতান আহমেদ টনি বিশ্বাস এবং কুষ্টিয়ার ‘বালি সাঈদ’ নামে পরিচিত সাঈদ খানকে সঙ্গে নিয়ে এই অবৈধ কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। তাদের এই তৎপরতা পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ও নদী খনন সংক্রান্ত সরকারি বিধিনিষেধকে সম্পূর্ণ উপেক্ষা করছে।
একজন স্থানীয় পরিবেশ কর্মী বলেন,
“হাইকোর্টের আদেশ শুধুমাত্র একটি নির্দিষ্ট মামলার প্রক্রিয়া স্থগিত রেখেছিল, কখনোই বালু উত্তোলনের অনুমতি দেয়নি। কিন্তু প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তা এবং রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় তারা নির্বিচারে নদী উজাড় করছে।”
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই অবৈধ উত্তোলনের সবচেয়ে ভয়াবহ প্রভাব পড়ছে পদ্মা নদীর তীরে অবস্থিত হার্ডিং ব্রিজ এবং লালন শাহ সেতুর ভিত্তির ওপর। ভারী যন্ত্রপাতি দিয়ে নদীর গভীর থেকে বালু উত্তোলনের ফলে নদীর স্বাভাবিক গতিপথ পরিবর্তিত হচ্ছে, যা ব্রিজ ও সেতুর পাইলিং দুর্বল করে ভূমিধসের ঝুঁকি তৈরি করছে।
প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তা ও রাজনৈতিক প্রভাব
গণমাধ্যমে সংবাদ ও ভিডিও ফুটেজ প্রকাশের পর ঈশ্বরদী প্রশাসন গত সপ্তাহে অল্প সময়ের জন্য অভিযান পরিচালনা করলেও, ৩ জুলাই সকাল থেকেই পুনরায় সক্রিয় হয়ে ওঠে চক্রটি। অবৈধ উত্তোলন বন্ধ না হয়ে বরং নতুন উদ্যমে চলতে থাকে। প্রতিবাদকারী স্থানীয় বাসিন্দা ও সাংবাদিকদের হুমকি-ধমকি ও মামলার ভয় দেখানো হচ্ছে।
সাড়াঘাটের এক বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম বলেন,
“নদী যাবে, সেতু যাবে, তারপর আমাদের ঘরবাড়ি… চোখের সামনে সব ধ্বংস হচ্ছে। কিন্তু প্রতিবাদ করলেই হামলার ভয়।”
জনগণের জোরালো দাবি
সচেতন মহলের মতে, পদ্মা নদীর সাড়াঘাট এলাকায় চলমান এই অবৈধ বালু উত্তোলন পরিবেশের জন্য ভয়াবহ হুমকি। তারা দাবি করেন, সরকারের উচ্চ পর্যায়ের হস্তক্ষেপ, পরিবেশ মন্ত্রণালয়, নদী রক্ষা কমিশন এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সমন্বিত পদক্ষেপ ছাড়া এই সংকট নিরসন সম্ভব নয়।
দাবি একটাই অবিলম্বে বন্ধ হোক পদ্মায় অবৈধ বালু উত্তোলন
Leave a Reply