বাগেরহাটে চারটি আসন বহালের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটি। বিক্ষোভ মিছিল থেকে বুধবার ও বৃহস্পতিবার দুই দিন সর্বাত্মক হরতালের ঘোষণা দেওয়া হয়।
মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বাগেরহাট-খুলনা মহাসড়কের দশানী ট্রাফিক মোড় থেকে মিছিলটি বের হয়। এ সময় মিছিলটি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে প্রতিবাদ সভায় মিলিত হয়। মিছিল ও প্রতিবাদ সভায় বিএনপি, জামায়াত, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, খেলাফত মজলিসসহ বিভিন্ন দলের নেতাকর্মীরা অংশগ্রহণ করেন।
প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য দেন, জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি এমএ সালাম, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য অ্যাড. ওয়াহিদুজ্জামান দিপু, জেলা জামায়েতের আমীর মাওলানা রেজাউল করিম, নায়েবে আমীর আব্দুল ওয়াদুদ, সেক্রেটারি শেখ মোহাম্মদ ইউনুস, বিএনপি নেতা সৈয়দ নাসির উদ্দিন মালেক প্রমুখ।
এ সময়, জেলা বিএনপির সদস্য সচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা মোজাফফর রহমান আলম, বিএনপি নেতা খান মনিরুল ইসলাম, জামায়াত নেতা অ্যাড. আব্দুল ওয়াদুদ, মঞ্জুরুল হক রাহাত, জেলা যুব দলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সুজন মোল্লা, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ নেতা মাওলানা ফারুক হোসাইনসহ বিভিন্ন দলের নেতাকর্মী ও ব্যবসায়ীরা উপস্থিত ছিলেন।
বক্তারা বলেন, বাগেরহাটের একটি আসন কমিয়ে নির্বাচন কমিশন জনগণের আশা আকাঙ্ক্ষার প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়েছে। একটি আসন কমে গেলে বাগেরহাটবাসী ক্ষতিগ্রস্ত হবে। বুধ ও বৃহস্পতিবার জেলা জুড়ে হরতাল পালন করা হবে। বাগেরহাটের মানুষের আশা আকাঙ্ক্ষার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে চারটি আসন বহাল রাখার দাবি জানান বক্তারা।
জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য অ্যাড. ওয়াহিদুজ্জামান দিপু বলেন, নির্বাচন কমিশন যে প্রক্রিয়ায় চারটি আসনকে তিনটি করেছে এবং কাটাছাটা করে জগাখিচুড়ি পাকিয়েছে, তা নির্বাচন সীমানা নির্ধারণ আইনের ৬ ধারা পরিপন্থী। এতে বাগেরহাটবাসী ক্ষুব্ধ হয়েছে আমরা উচ্চ আদালতের শরণাপন্ন হব।
বাগেরহাট জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি এমএ সালাম বলেন, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া হবে। প্রয়োজনে নির্বাচন কমিশনকে বিদায় করে দাবি আদায় করা হবে।
উল্লেখ্য, গত ৩০ জুলাই দুপুরে আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাগেরহাটের চারটি আসনের মধ্যে একটি আসন কমিয়ে জেলায় তিনটি আসন করার প্রাথমিক প্রস্তাব দেয় নির্বাচন কমিশন। এরপর থেকেই বাগেরহাটবাসী আন্দোলন শুরু করে। চারটি আসন বহাল রাখার দাবিতে নির্বাচন কমিশনের শুনানিতে অংশগ্রহণ করেন বাগেরহাটবাসী। এরপরেও ৪ সেপ্টেম্বর নির্বাচন কমিশন শুধু সীমানা পরিবর্তন করে তিনটি আসনই জারি রেখে চূড়ান্ত গেজেট প্রকাশ করে। নির্বাচন কমিশনের এই আসন বিন্যাস গন মানুষের দাবিকে উপেক্ষা করেছে বলে জানান সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটির নেতাকর্মীরা।
চূড়ান্ত গেজেট অনুযায়ী, বাগেরহাট-১ (বাগেরহাট সদর-চিতলমারী-মোল্লাহাট), বাগেরহাট-২ (ফকিরহাট-রামপাল-মোংলা) ও বাগেরহাট-৩(কচুয়া-মোরেলগঞ্জ-শরণখোলা)।
এছাড়াও বাগেরহাটে ১৯৬৯ সাল থেকে ৪টি আসনে নির্বাচন হয়ে আসছিল। তখনকার সীমানা ছিল- বাগেরহাট-১ (চিতলমারী-মোল্লাহাট-ফকিরহাট), বাগেরহাট-২(বাগেরহাট সদর-কচুয়া), বাগেরহাট-৩ (রামপাল-মোংলা) বাগেরহাট-৪ (মোরেলগঞ্জ-শরণখোলা)।
Leave a Reply