সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেছেন, সরকার কর্তৃক গৃহীত জাতীয় রুফটপ সোলার কর্মসূচিকে আমরা স্বাগত জানাচ্ছি। তবে বিগত সরকারের আমলে এই কর্মসূচির সুবিধাভোগী হয়েছেন অনেকে। সেই জায়গায় যেন এ কর্মসূচিটি না যায়, এজন্য শুরু থেকেই আমাদের সতর্ক থাকা দরকার।
রোববার (২৭ জুলাই) ধানমন্ডির সিপিডি কার্যালয়ে আয়োজিত জাতীয় রুফটপ সোলার কর্মসূচির নকশা, বাস্তবায়ন, পর্যবেক্ষণ ও মূল্যায়ন কাঠামো বিষয়ে প্রস্তাবনা শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, গত ২৩ জুলাই অন্তর্বর্তী সরকার জাতীয় রুফটপ সোলার কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। সরকারের জ্বালানি নীতির আওতায় এই কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। জ্বালানি নীতিতে ২০৩০ সালের মধ্যে ২০ শতাংশ ও ২০৪০ সালের মধ্যে ৩০ শতাংশ নবায়নযোগ্য জ্বালানির উত্তরণ করা হবে। সরকারের এই উদ্যোগকে আমরা সতর্কভাবে স্বাগত জানাচ্ছি।
সতর্কতার কারণ হিসেবে তিনি বলেন, এর আগে রাজধানীর বাসা-বাড়িতে রুফটপ কর্মসূচির অধীনে, বাসা-বাড়ির ছাদে সোলার লাগানোর একটি বাধ্যবাধকতা এখনো রয়েছে। বাসা-বাড়িতে সোলার লাগানোর এক ধরনের লোক দেখানোর কাজ হয়েছে। এর ফলে সৌরবিদ্যুৎ নিয়ে মানুষের মনে স্থায়ী নেতিবাচক মনোভাব তৈরি হয়েছে। বিগত সরকারের আমলে এই কর্মসূচির সুবিধাভোগী হয়েছেন অনেকে। সেই যায়গায় যেন এই কর্মসূচিটি না যায়, সে জন্য শুরু থেকেই আমাদের সতর্ক থাকা দরকার।
গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, বিগত সরকারের নেওয়া ভুল নীতির কারণে জ্বালানি খাতের প্রতিষ্ঠান আর্থিক সংকটের মধ্যে পড়েছে। সংকটের ধারাবাহিকতায় এই মুহূর্তে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সরবরাহ যথেষ্ট কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে।
তিনি আরও বলেন, সম্ভবত অন্তর্বর্তী সরকার তার সময়কালে এই কার্যক্রমটির একটি সমাপনী দেখতে চান। এজন্য তাড়াহুড়ো করে একটি সমাপনী টানতে চাইছেন। এটি ২০২৫ এর ডিসেম্বরে সমাপনীর বিষয় নয়। এটি দীর্ঘমেয়াদি। এত বড় কার্যক্রম দ্রুততার সঙ্গে করলে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা আবার দেখা দেবে। সরকারের ক্রয় কর্মসূচিতে ত্রুটি থাকতে পারে।
উল্লেখ্য, সরকারি সব ভবনে সৌরবিদ্যুৎ স্থাপনের নির্দেশনা দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। এ লক্ষ্যে ‘জাতীয় রুফটপ সোলার কর্মসূচি’ নেওয়া হয়েছে। এই আওতায় ডিসেম্বর মধ্যে সরকারি অবকাঠামোতে প্রায় ৩ হাজার সোলার সংযোগ স্থাপন করা হবে।
সরকারের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে সিপিডি। সব সরকারি ভবনে নয় সারা দেশের ৪৪৮ সরকারি-বেসরকারি ভবনে পরীক্ষামূলকভাবে এই কর্মসূচি নেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে সিপিডি।
পাশাপাশি কর্মসূচিতে রক্ষণাবেক্ষণ নির্দেশিকা প্রদান করা, পলিসি গাইড লাইন করা, সোলার প্যানেলে কর মওকুফ করা, সোলার প্যানেল ক্রয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে গ্রিন এনার্জি ফান্ডের ব্যবস্থা করা, বাস্তবায়নকারী সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয় করার প্রস্তাব দিয়েছে সিপিডি।
আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন— বাংলাদেশ সোলার অ্যান্ড রিনিউয়েবল এনার্জি অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সদস্য মো. নাসির উদ্দিন, স্রেডার পরিচালক মো. মুজিবুর রহমান, পাওয়ার গ্রিড বাংলাদেশের প্রধান প্রকৌশলী সরদার মোহাম্মদ জাফরুল হাসান প্রমুখ।
Leave a Reply