1. tv@tarangotv.com : তরঙ্গ টিভি : তরঙ্গ টিভি
  2. info@www.tarangotv.com : তরঙ্গ টিভি :
বুধবার, ০৬ অগাস্ট ২০২৫, ০৯:৫৩ অপরাহ্ন

বিয়ের তিন মাসের মাথায় ঝরে গেল নববধূর প্রাণ

প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত: সোমবার, ১৭ মার্চ, ২০২৫
  • ২৭ বার পড়া হয়েছে

গত ৪ মার্চ যৌতুকের জন্য মারধরের শিকার হয়ে গলায় ফাঁস দেওয়ার চেষ্টা করেন ফেনী সদর উপজেলার কালিদহ ইউনিয়নের দক্ষিণ গোবিন্দপুর গ্রামের প্রবাসী সাইদুর রহমান তৌহিদের স্ত্রী মারজান আক্তার ঝুমুর। ওইদিন ঝুমুরের স্বামীর পরিবারের সদস্যরা তাৎক্ষণিক উদ্ধার করে তাকে প্রথমে ফেনী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করান। অবস্থার অবনতি হলে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। তবে সেখানে দীর্ঘ ১২ দিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে মারা গেলেন তিনি।

গত শনিবার (১৫ মার্চ) সকালে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়েছে। বিয়ের তিন মাসের মাথায় ঝুমুরের এ মৃত্যু নিয়ে উঠে আসছে নানা ধরনের তথ্য।

পুলিশ ও নিহতের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার আলমপুর গ্রামের আবদুল আলিমের মেয়ে মারজান আক্তার ঝুমুরের সঙ্গে গত বছরের ৮ ডিসেম্বর পাঁচ লাখ টাকা দেনমোহরে বিবাহ হয় ফেনী সদর উপজেলার কালিদহ ইউনিয়নের দক্ষিণ গোবিন্দপুর গ্রামের কামু ভূঞা বাড়ির প্রবাসী সাইদুর রহমান তৌহিদের। ছেলে প্রবাসে থাকায় তখন মোবাইলে তাদের বিয়ে সম্পন্ন হয়। সম্প্রতি তৌহিদ প্রবাস থেকে দেশে আসার পর গত ২৭ ফেব্রুয়ারি বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শেষে ঝুমুরকে নিজ বাড়িতে নিয়ে যান।

বিয়ের পর থেকেই স্বামী ও তার পরিবারের সদস্যরা তিন লাখ টাকা ও পাঁচ ভরি স্বর্ণ যৌতুক দাবি করে আসছিল বলে জানান পরিবার। ঝুমুরের বাবা একজন নির্মাণ শ্রমিক হওয়ায় এ দাবি পূরণ করা তার পক্ষে সম্ভব হয়নি। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে গত ৪ মার্চ স্বামী সাইদুর রহমান, শ্বশুর সাহাব উদ্দিন ও শাশুড়ি বিবি হাজেরা মিলে তাকে (ঝুমুর) মারধর করে গুরুতর আহত করেন। একপর্যায়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ঝুমুরের শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক দেখে খুব দ্রুতই হাসপাতাল থেকে সটকে গিয়ে আবারও প্রবাসে পাড়ি জমান স্বামী তৌহিদ।

নিহতের মা ফরিদা আক্তার বলেন, তাকে (ঝুমুর) চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার চারদিন পর আমাদের জানানো হয়েছিল। পরে আমরা হাসপাতালে গেলে তার স্বামীসহ শ্বশুর বাড়ির লোকজন হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যায়। মৃত্যুর আগে ঝুমুর তার স্বামী, শ্বশুর ও শাশুড়ির চালানো নির্যাতনের ঘটনার বিস্তারিত জানিয়েছেন। আমি এ হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই।

এদিকে গত ১২ মার্চ নিহতের বাবা আবদুল আলিম বাদী হয়ে এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ঝুমুরের স্বামী, শ্বশুর ও শাশুড়িকে আসামি করে ফেনী মডেল থানায় একটি অভিযোগ করেন। পরে তা মামলা হিসেবে এজাহারভুক্ত হয়। শনিবার (১৫ মার্চ) এ মামলায় শ্বশুর সাহাব উদ্দিনকে ফেনী শহরের রামপুর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও ফেনী মডেল থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক আনোয়ার হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পরপরই নিহতের স্বামীর বাড়িতে গিয়েছিলাম। তাদের বাড়িতে কাউকে পাওয়া যায়নি। পরবর্তী সেদিন যৌতুকের দাবি নিয়ে কলহের জের ধরে ঝুমুর গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে বলে জানতে পেরেছি। তখন শ্বশুর বাড়ির লোকজন হাসপাতালে নিলেও চারদিন পর তার পরিবারকে জানানো হয়। সর্বশেষ নিহতের প্রবাসী স্বামী দেশ ছেড়েছে বলে শুনতে পেয়েছি। তার শাশুড়িকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

এ ব্যাপারে ফেনীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস্) নোবেল চাকমা বলেন, যৌতুকের দাবিতে নির্যাতনের ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে। ইতোমধ্যে গ্রেপ্তার নিহতের শ্বশুরকে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করছে। আরও তথ্যের জন্য প্রয়োজনে তার রিমান্ড আবেদন করা হবে। এছাড়া ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।

নিহতের স্বামীর দেশত্যাগের গুঞ্জনের বিষয়ে জানতে চাইলে পুলিশের এ কর্মকর্তা বলেন, তার দেশত্যাগের বিষয়টি লোকমুখে শুনেছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

Leave a Reply

আরো সংবাদ পড়ুন
© তরঙ্গ টিভি
ওয়েবসাইট ডিজাইন : ইয়োলো হোস্ট