সিরিয়ার গৃহযুদ্ধের বিরোধী শক্তি আলেপ্পো শহরের অধিকাংশ নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিয়েছে বলে শনিবার একটি পর্যবেক্ষক সংস্থা জানিয়েছে। ২০১৬ সালের পর প্রথমবারের মতো শহরটিতে রুশ বিমান হামলারও খবর পাওয়া গেছে।
খবর অনুসারে, বুধবার থেকে শুরু হওয়া বিরোধী শক্তির দ্রুত আক্রমণে সিরিয়ার সরকারি বাহিনী পিছু হটতে বাধ্য হয়েছে। একই দিনে লেবাননে ইসরায়েল ও ইরান সমর্থিত হিজবুল্লাহর মধ্যে দুই মাসের যুদ্ধ শেষে একটি নাজুক যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়।
ব্রিটেনভিত্তিক সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস জানায়, ‘হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস) এবং তাদের সহযোগী গোষ্ঠীগুলো আলেপ্পোর অধিকাংশ অংশ, সরকারি দপ্তর ও কারাগারের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে।’ এইচটিএস মূলত আল-কায়েদার সাবেক সিরিয়া শাখার নেতৃত্বাধীন একটি জোট।
পর্যবেক্ষক সংস্থা জানায়, গত কয়েক দিনের সংঘর্ষে ৩১১ জন নিহত হয়েছে। এর মধ্যে ১৮৩ জন এইচটিএস ও তুরস্ক-সমর্থিত বিদ্রোহী গোষ্ঠীর সদস্য, ১০০ জন সরকারি বাহিনী এবং ২৮ জন বেসামরিক নাগরিক। রুশ বিমান হামলার খবরও নিশ্চিত করেছে সংস্থাটি। ২০১৬ সালের পর প্রথমবারের মতো রুশ বিমানগুলো আলেপ্পো শহরের বিভিন্ন এলাকায় হামলা চালিয়েছে।
সংবাদ সংস্থা এএফপির একজন প্রতিবেদক জানিয়েছেন, শুক্রবার গভীর রাতে বিরোধী যোদ্ধারা আলেপ্পো শহরের কেন্দ্রস্থলে উল্লাস করে। তাদেরকে শহরের প্রতীকি সিটাডেলের সামনে দেখা যায়।
পর্যবেক্ষক সংস্থা জানায়, আলেপ্পোর গভর্নর এবং পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তারা শহরের কেন্দ্র থেকে সরে গেছেন। এদিকে সরকারি বাহিনী জানিয়েছে, কিছু এলাকায় প্রতিরোধ গড়ে তুলে নিয়ন্ত্রণ পুনরুদ্ধার করা হয়েছে।
বিরোধী যোদ্ধারা আলেপ্পোর উত্তরে কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ শহর সারাকিবসহ ৫০টির বেশি গ্রাম ও শহরের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। সারাকিব আলেপ্পোর দক্ষিণ-পশ্চিমে প্রায় ৪০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।
রাশিয়ার সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, তারা ‘চরমপন্থী’ গোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে হামলা চালাচ্ছে। এদিকে তুরস্ক ইদলিব অঞ্চলে বোমা হামলা বন্ধের দাবি জানিয়েছে। ২০২০ সালে তুরস্ক-রাশিয়ার মধ্যে হওয়া একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি ইদলিব অঞ্চলে কার্যকর রয়েছে। তবে সাম্প্রতিক সহিংসতায় এই চুক্তি ভেঙে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।