ফরিদপুরের ভাঙ্গায় সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্বিন্যাসের প্রতিবাদে দ্বিতীয় দিনের মতো মহাসড়ক অবরোধ চলছে। আন্দোলনকারীরা সকাল থেকে সড়ক অবরোধ করে অবস্থান নিয়েছেন। দুপুর গড়িয়ে গেলে তারা মহাসড়কেই খাবারের ব্যবস্থা করেন।
বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৩টার দিকে ঢাকা–খুলনা মহাসড়কের মুনসুরাবাদ এলাকায় আন্দোলনকারীরা সামিয়ানা টানিয়ে সড়কের ওপর বসে দুপুরের খাবার হিসেবে খিচুড়ি খান। এতে শিশু থেকে শুরু করে নারী-পুরুষ সকলে অংশ নেন।
আন্দোলনকারীরা বলেন, আমরা ভাঙ্গার সাধারণ মানুষ স্পষ্টভাবে জানাতে চাই— ভাঙ্গাকে ফরিদপুর-৪ আসন থেকে কেটে অন্য আসনে দেওয়ার সিদ্ধান্ত আমরা কোনোভাবেই মানি না, মানবো না। এই সিদ্ধান্ত আমাদের ইতিহাস, সংস্কৃতি আর অস্তিত্বকে আঘাত করেছে। প্রয়োজনে আমরা রক্ত দেব, জীবন দেব, কিন্তু ভাঙ্গার মাটি কখনো কাউকে ছাড়বো না। ভাঙ্গা ভাঙ্গার কাছেই থাকবে, অন্য কোথাও যাবে না। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আমাদের এই আন্দোলন চলবে, রাস্তায় রাস্তায় স্লোগান উঠবে, মানুষ অবরোধে থাকবে। ভাঙ্গা বাঁচাতে আমরা শেষ পর্যন্ত লড়বো।
ভাঙ্গার হামিরদী ইউনিয়নের মুনসুরাবাদ গ্রামের বাসিন্দা কাজী আরিফ (২৯) বলেন, ভাঙ্গা শুধু মানচিত্রের একটি ইউনিয়ন নয়, এটা আমাদের শিকড়, আবেগ আর অস্তিত্বের অংশ। প্রশাসন যদি মনে করে আমরা চুপচাপ মেনে নেব, তাহলে ভুল করছে। আমরা জানি- আন্দোলন মানে ভোগান্তি, কিন্তু ভাঙ্গা রক্ষার প্রশ্নে কোনো আপস নেই। রাস্তায় বসে থাকতে হবে, বসবো।
তিনি বলেন, স্লোগান তুলতে হবে, তুলবো। প্রয়োজনে রাত কাটাবো মহাসড়কে। আমরা শান্তিপ্রিয় মানুষ, কিন্তু অবিচার হলে প্রতিবাদ করবই। আলগী আর হামিরদী ভাঙ্গার ছিল, ভাঙ্গারই থাকবে— এটাই আমাদের শেষ কথা।
ভাঙ্গা হাইওয়ে থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রোকিবুজ্জামান বলেন, এত মানুষকে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়। তারা বলেছে, দাবি মানা না হলে রাস্তা ছাড়বে না।
জানা যায়, গত ৪ সেপ্টেম্বর নির্বাচন কমিশনের গেজেটে ভাঙ্গা উপজেলার আলগী ও হামিরদী ইউনিয়নকে ফরিদপুর-৪ থেকে কেটে ফরিদপুর-২ আসনে যুক্ত করা হয়। এর প্রতিবাদে এলাকাবাসী আন্দোলন শুরু করে।