দশ বছর আগে মায়ের অপমান ও মারধরের প্রতিশোধ নিতেই শুরু হয়েছিল এক তরুণের পাগল করা খোঁজ। ঘটনাটি যেন কোনও বলিউড সিনেমার গল্প, তবে বাস্তবতার নির্মমতা এতে আরও গভীর। এ গল্প লখনৌর সোনু কাশ্যপের, যিনি মায়ের অপমানের প্রতিশোধ নিতে দীর্ঘ এক দশক ধরে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরেছেন অপরাধী মনোজকে খুঁজতে।
মঙ্গলবার (২২ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
শেষমেশ বন্ধুদের নিয়ে পরিকল্পনা করে খুন করেন মনোজকে, যিনি নারকেলের পানি বিক্রি করতেন। প্রতিশোধের পর বন্ধুদের পার্টি দেওয়ার প্রতিশ্রুতিতেই তার বন্ধুরা হত্যায় সহায়তা করে। কিন্তু খুনের পরের পার্টির ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট হওয়ার পর পুলিশের জালে ধরা পড়ে সবাই।
ঘটনার শুরু
প্রায় এক দশক আগে সোনুর মাকে একটি তুচ্ছ বিষয়কে কেন্দ্র করে মারধর করেছিলেন মনোজ। ঘটনার পর এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যান মনোজ। মায়ের অপমান ও লাঞ্ছনায় ক্ষুব্ধ সোনু প্রতিশোধ নেওয়ার সংকল্প করে খুঁজতে থাকেন মনোজকে। সময় গড়ালেও তার অনুসন্ধান থামেনি। তিন মাস আগে লখনৌ শহরের মুন্সি পুলিয়া এলাকায় অবশেষে মনোজকে খুঁজে পান তিনি। সেখান থেকে শুরু হয় খুনের নীলনকশা।
দৈনিক রুটিন, দোকান বন্ধের সময় সব নজরে রাখেন সোনু। তবে খুনের জন্য প্রয়োজন ছিল সহযোগী। বন্ধু রঞ্জিত, আদিল, সালামু ও রেহমত আলীকে সঙ্গে নেন সোনু, শর্ত একটাই— খুনের পর পার্টি হবে। ২২ মে দোকান বন্ধ করে একা থাকা অবস্থায় মনোজের ওপর আক্রমণ চালান তারা। লোহার রড দিয়ে আঘাত করে রক্তাক্ত অবস্থায় ফেলে রেখে যায়। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান মনোজ।
‘পার্টি’ থেকে পুলিশি জালে
পুলিশের কাছে এটি ছিল অন্ধ অনুসন্ধান। সিসিটিভি ফুটেজে অপরাধীরা ধরা পড়লেও তাদের খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। অন্যদিকে খুনের পর প্রতিশোধ পূর্ণ হওয়ায় পার্টির আয়োজন করে সোনু। মদ আর নাচ-গানের মধ্যে পার্টির ছবি উঠে আসে সোশ্যাল মিডিয়ায়।
সেই ছবিই পুলিশের জন্য বড় সূত্র হয়ে দাঁড়ায়। সিসিটিভির ছবির সঙ্গে সোশ্যাল মিডিয়ার ছবির মিল খুঁজে পায় পুলিশ। অপরাধের সময় যে কমলা টি-শার্ট পরা ছিল, সেটিই পরে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছবি পোস্ট করেছিলেন এক অভিযুক্ত। সেখান থেকে সোশ্যাল মিডিয়া প্রোফাইল চিহ্নিত করে পুলিশ, একে একে গ্রেফতার করা হয় পাঁচ অভিযুক্তকেই।
Leave a Reply