1. info@www.tarangotv.com : তরঙ্গ টিভি :
মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ০১:৫৮ পূর্বাহ্ন

ভোলা-বরিশাল সেতুর দাবিতে লংমার্চ : পদ্মা নদীতে আট শিক্ষার্থী ভেসে যাওয়ার ঘটনা।

প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ২০ নভেম্বর, ২০২৫
  • ৩৪ বার পড়া হয়েছে

ভোলা-বরিশাল সেতু নির্মাণের দাবিতে ঢাকার সেতু ভবনের উদ্দেশে ঘোষিত লংমার্চ বুধবার হঠাৎ নাটকীয় মোড় নেয়। “ভোলা-বরিশাল ছাত্র জনতা” ব্যানারে থাকা শিক্ষার্থীরা পদ্মা সেতু দিয়ে হেঁটে যাওয়ার অনুমতি না পেয়ে বিকেল তিনটার দিকে বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বাধিক খরস্রোতা পদ্মা নদী সাঁতরে পার হওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। ভয়াবহ স্রোতের মুখে নদীতে নামার পর মুহূর্তেই অন্তত আট শিক্ষার্থীকে স্রোতে ভেসে যেতে দেখা যায়।

রাত আটটার দিকে দীর্ঘ সময় স্রোতের সঙ্গে লড়াই করে পাঁচজন শিক্ষার্থী জীবিত অবস্থায় পৌঁছে যায় মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলার শিমুলিয়া ঘাটে। কাঁপতে থাকা শিক্ষার্থীদের উদ্ধার করে স্থানীয় লোকজন আগুন জ্বালিয়ে গরম করার উদ্যোগ নেন। ঘটনাস্থলে উপস্থিত লোকজনের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। তারা প্রশ্ন তুলেন—“এভাবে শিক্ষার্থীরা জীবন ঝুঁকিতে পড়ল, অথচ সেতু কর্তৃপক্ষ কী করল?”

ভেসে যাওয়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে দুজনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার পাচ্চর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এর মধ্যে একজনের শারীরিক অবস্থা সংকটজনক হওয়ায় তাকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। উদ্ধার অভিযানের মধ্যে আরও একজন শিক্ষার্থীকে পুলিশ জীবিত উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়।

ঘটনার পর পদ্মা সেতুর জাজিরা প্রান্তে সেতু কর্তৃপক্ষ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অবস্থান নেয়। উদ্ধার অভিযানে কয়েকটি ট্রলার নদীতে নামানো হলেও প্রবল স্রোত ও অন্ধকারের কারণে কাজ বেশ কঠিন হয়ে পড়ে।

গোসাইরহাট সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শামসুল আরেফীন বলেন, “সেতু দিয়ে হাঁটার অনুমতি না থাকায় তারা নদী পাড়ি দেওয়ার চেষ্টা করেন। কিছু দূর এগিয়ে তারা শরীয়তপুরের একটি চরে অবস্থান নিয়েছেন। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।”

শরীয়তপুর জেলা পুলিশ সুপার নজরুল ইসলাম জানান, “আমরা বারবার নিষেধ করেছি নদীতে নেমে সাঁতার কাটতে, কিন্তু তারা কথা না শুনে পানিতে নামে। উদ্ধার কাজ অব্যাহত রয়েছে এবং তারা মুন্সীগঞ্জে পৌঁছানোর সময় আমরা সঙ্গে ছিলাম।”

লংমার্চের নেতৃত্বে থাকা মীর মোশারফ হোসেন অমি বলেন, “পদ্মা সেতু দিয়ে হাঁটার অনুমতি না দেওয়ায় আমরা বাধ্য হয়ে নদী সাঁতরে পার হওয়ার সিদ্ধান্ত নেই। কেউ নিহত বা আহত হলে এর দায় সম্পূর্ণভাবে সেতু কর্তৃপক্ষ ও সরকারের।”

তিনি আরও বলেন, “দক্ষিণাঞ্চলের উন্নয়ন ও যোগাযোগ ব্যবস্থার স্বার্থে ভোলা-বরিশাল সেতু নির্মাণ এখন জনদাবিতে রূপ নিয়েছে।”

শিমুলিয়া ঘাটে পাঁচ শিক্ষার্থী জীবিত পৌঁছানোর ঘটনা স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়েছে। তারা অভিযোগ করেন—“এত বড় নদীতে তরুণ শিক্ষার্থীরা প্রাণ হাতে নিয়ে সাঁতার কাটছে, অথচ প্রশাসন সময়মতো সহায়তা করল না। তাদের এমন ঝুঁকি নেওয়ার মতো পরিস্থিতি কেন তৈরি হলো—এটাই বড় প্রশ্ন।”

ভোলা-বরিশাল সেতু নির্মাণের দাবিতে লংমার্চের এই ঘটনাটি দক্ষিণাঞ্চলের যোগাযোগ সংকটের বাস্তব চিত্র নতুন করে সামনে এনেছে।

আরো সংবাদ পড়ুন

© ২০২০-২০২৫ তরঙ্গ টিভি,  সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত, আমাদের প্রকাশিত সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার অপরাধ।

   
ওয়েবসাইট ডিজাইন : ইয়োলো হোস্ট