
অষ্টম হিজরির ২০ রমজান। ইসলামের ইতিহাসে দিনটি প্রোজ্জ্বল হয়ে আছে ফাতহে মক্কা বা মক্কাবিজয় নামে। সেদিন ১০, ০০০ মুজাহিদকে সাথে নিয়ে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম বিজয়ীর বেশে প্রবেশ করলেন মক্কায়।
পৃথিবীর ভাগ্যে এরকম মহিমান্বিত বিজয় হয়তো আর দেখা হবে না। কারণ মক্কার মতো একটা প্রতাপান্বিত ঐশর্যময় শহরকে রাসুল জয় করেছেন বিনা রক্তপাতে, বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায়। আর শহর জয়ের পর ন্যায় ও ক্ষমার যে পরাকাষ্ঠা তিনি দেখিয়েছেন, এরকম দৃষ্টান্ত রাহমাতুল্লিল আলামিনের পক্ষেই সম্ভব।
মক্কাবিজয়ের দিন হজরত বিলাল ছিলেন রাসুলের সাথে—তার ছায়াসঙ্গী হয়ে। রাসুল মাথায় কালো পাগড়ি বেঁধে ঘোড়ায় চড়ে মক্কার প্রাণকেন্দ্র কাবাচত্বরে এলেন। চারিদিকে তখন হাজার হাজার জনতার ভিড়। তাদের মধ্য থেকে যে তিন ব্যক্তি রাসুলের সাথে কাবার ভেতরে প্রবেশ করার সৌভাগ্য লাভ করলেন, হজরত বিলাল ছিলেন তাদের একজন। সেদিন অনেক বড়ো বড়ো সাহাবি তার এই সৌভাগ্য দেখে ঈর্ষাকাতর হয়েছিলেন।
রাসুল কাবার ভেতরে ঢুকে একে মূর্তির নাপাকি থেকে পূতপবিত্র করলেন। একেকটা মূর্তির গায়ে তিনি যখন আঘাত করছিলেন, তখন বলছিলেন, জাআল হক ওয়া জাহাকাল বাতিল—সত্য এসে গেছে, মিথ্যা বিতাড়িত হোক…
এভাবে জোহরের নামাজের সময় হয়ে এলো। রাসুল বিলালকে আদেশ করলেন, কাবার ছাদে উঠে আজান দিতে। রাসুলের কথায় হজরত বিলাল কাবার ছাদে উঠে শুরু করলেন সুগভীর সুমধুর সুরের আজান—যা শুনে উপস্থিত সকলেই বিমোহিত হয়েছিল।
মুসলমানরা বিলালের আজানের প্রতিটি বাক্যকে সুউচ্চ স্বরে তাকরার করছিল। আর যারা নওমুসলিম—তাদের অন্তর তখনো কিছুটা কুফুরির দিকে ধাবিত হওয়ায়—তারা তার উন্নত শির দেখে এবং শাশ্বত আজান শুনে হিংসায় জ্বলেপুড়ে যাচ্ছিল।
রাসুলের মুয়াজ্জিন হজরত বিলালের এই শির হাশরের ময়দানেও চির উন্নত দেখাবে!
© ২০২০-২০২৫ তরঙ্গ টিভি, সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত, আমাদের প্রকাশিত সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার অপরাধ।