1. tv@tarangotv.com : তরঙ্গ টিভি : তরঙ্গ টিভি
  2. info@www.tarangotv.com : তরঙ্গ টিভি :
বুধবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০১:৪২ পূর্বাহ্ন

মাহমুদা হাবীবা প্রার্থী বাছাইয়ে ‘থার্ড পার্টি’ যাচাই চলছে, পরিচ্ছন্ন ইমেজই অগ্রাধিকার

প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
  • ২ বার পড়া হয়েছে

বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য ও কেন্দ্রীয় কৃষক দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহমুদা হাবীবা বলেছেন, খালেদা জিয়া শুধু বিএনপির নেত্রী নন, এখন তিনি বাংলাদেশের জাতীয় নেতায় পরিণত হয়েছেন। গুরুতর অসুস্থতার মধ্যেও তার অদম্য মনোবল গোটা দলকে অনুপ্রাণিত করছে। তিনি মনে করেন, এক ঘণ্টার জন্য হলেও খালেদা জিয়ার সংসদে উপস্থিতি জাতির জন্য হবে গৌরবের।

আসন্ন নির্বাচনে বিএনপি তরুণ ভোটারদের গুরুত্ব দিচ্ছে এবং প্রার্থী বাছাইয়ে ‘থার্ড পার্টি’ যাচাই প্রক্রিয়া চলমান আছে। ৫ আগস্টের পর দেশের ভোটারদের মানসিকতায় বড় পরিবর্তন এসেছে, যা রাজনীতিতে নতুন সম্ভাবনার ইঙ্গিত দিচ্ছে। সম্প্রতি ঢাকা পোস্টের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন মাহমুদা হাবীবা। সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন ঢাকা পোস্টের চিফ অব পলিটিক্যাল অ্যান্ড স্টেট অ্যাফেয়ার্স আদিত্য রিমন।

 প্রথমে জানতে চাই খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের সর্বশেষ অবস্থা; পাশাপাশি আগামীতে তার বিদেশ যাওয়া, রাজনীতি ও নির্বাচনে অংশ নেওয়া প্রসঙ্গে যদি বলতেন।

মাহমুদা হাবীবা : প্রথমত, আমাদের চেয়ারপার্সনের স্বাস্থ্য খুব একটা ভালো নেই। তারপরও বাধ্য হয়ে মাঝে মাঝে কিছু লোকের সঙ্গে তাকে দেখা করতে হচ্ছে। ভঙ্গুর স্বাস্থ্য নিয়েও তিনি অসাধারণ মনোবলের অধিকারী। যে কারণে তিনি এত কঠিন সময় সহজে পার করতে পারছেন। তার মতো এমন শক্ত মনোবল আমি খুব কম মানুষের মধ্যে দেখেছি।

তিনি সবসময় আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করেছেন— আমাকে মুক্ত বাংলাদেশ দেখাও। আজ তিনি সেই বাংলাদেশই দেখছেন। তবে, চিকিৎসার জন্য আবারও তিনি বিদেশে যেতে পারেন। কারণ, উনার যে চিকিৎসা হয়েছে, এর বেশি চিকিৎসা এখানে দেওয়ার সুযোগ নেই। ফলে তিনি খুবই সংবেদনশীল অবস্থায় আছেন।

আর রাজনীতি করা প্রসঙ্গে বলতে চাই, আমাদের চেয়ারপার্সন ফের সংসদে আসুক, এক ঘণ্টার জন্য হলেও। এটি নিয়ে বিএনপির মধ্যে কোনো প্রশ্ন নেই। তিনি জীবনে কোনো নির্বাচনে পরাজিত হননি। অতীতে পাঁচটি আসনে একসঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে সবকটিতে জয়ী হয়েছেন। প্রতিদ্বন্দ্বীর ভোট ছিল অনেক পেছনে। আজ তিনি শুধু বিএনপির চেয়ারপার্সন নন, বরং বাংলাদেশের জাতীয় নেত্রী। এখনো তিনি নির্বাচনে প্রার্থী হলে প্রচার-প্রচারণার দরকার হবে না। তিনি কোন আসন থেকে প্রার্থী হয়েছেন, এটুকু শুনলেই হবে।

বিএনপি যদি রাষ্ট্রপরিচালনার সুযোগ পায় তাহলে দেশনেত্রীর অংশগ্রহণ এবং তার অংশীজন হওয়াই আমাদের জন্য হবে গৌরব ও আনন্দের বিষয়।

dhakapost

 একটু ভিন্ন প্রসঙ্গে আসি। বাংলাদেশে তাইওয়ানের ‘তাইপেই অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক অফিস’ ২০০৪ সালে খোলা হয়। বিএনপি সর্বশেষ ক্ষমতায় থাকাকালে এটি করা হয়। ফলে চীনের সঙ্গে সম্পর্কের বিপর্যয় ঘটে। আমরা জেনেছি, ৫ আগস্টের পরে আপনি চীন সফর করেছেন। এখন দেশটির নেতৃবৃন্দের সঙ্গে বিএনপির সম্পর্ক কেমন?

মাহমুদা হাবীবা : ঐতিহাসিকভাবে চীনের সঙ্গে বাংলাদেশ এবং বিএনপির সম্পর্ক অত্যন্ত ভালো। বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালে কিছু ঘটনা চীনকে হয়তো ক্ষুব্ধ করেছিল, তবে সম্পর্ক কখনো ভেঙে যায়নি। আমি ৫ আগস্টের পরে ব্যক্তিগতভাবে তিনবার চীন সফর করেছি। ২০১৩ ও ২০১৮ সালে তরুণ নেতাদের একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গেও গিয়েছিলাম। আমার অভিজ্ঞতায় চীনের সঙ্গে বিএনপির সম্পর্ক কখনো অন্যরকম ছিল না, যেটা আপনারা শুনেছেন। চীনের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখার প্রবল সদিচ্ছা সবসময়ই আমাদের ছিল।

এ বিষয়ে আমি একটি চমৎকার স্মৃতিচারণ করতে চাই— বেইজিংয়ে চীনা কমিউনিস্ট পার্টির একটি জাদুঘর আছে, যেটা খুব বেশিদিন হয়নি উদ্বোধন হয়েছে। ওখানে বিভিন্ন দেশের নেতাদের অসংখ্য ছবি আছে। বাংলাদেশ থেকে কেবল খালেদা জিয়া এবং তৎকালীন চীনের প্রেসিডেন্টের একসঙ্গে হাঁটার একটি বড় ছবি প্রদর্শিত রয়েছে। বিষয়টি প্রমাণ করে, বিএনপি ক্ষমতায় না থাকলেও সম্পর্কের ক্ষেত্র দেশটি আমাদের মূল্যায়ন করেছে।

ভূ-রাজনীতিতে প্রাপ্তি ও প্রত্যাশার প্রশ্ন আসে। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের সময় থেকেই আমাদের পররাষ্ট্রনীতি ছিল সবার সঙ্গে ভারসাম্যপূর্ণ সম্পর্ক। বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে আমাদের অপ্রশিক্ষিত বা অদক্ষ জনশক্তি রপ্তানিতে বিশেষ ভূমিকা রেখেছিলেন শহীদ জিয়া। তার সময়ে ভারতের সঙ্গেও একটি কার্যকর ও সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক ছিল। চীনের সঙ্গেও মোটামুটি যথেষ্ট ভালো সম্পর্ক ছিল।

এখনো চীন চেষ্টা করছে নিঃসন্দেহে, কারণ সর্বশেষ বিএনপির মহাসচিবের নেতৃত্বে একটি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি দল দেশটি সফর করে এসেছে। বন্ধুত্বে যদি কোনো ঘাটতি থাকে, সেটি থেকে উত্তরণে এটি ছিল একটি মহান উদ্যোগ।

দ্বিতীয়ত, চীনের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো করা মানে এটি নির্দেশ করে না যে অন্যের সঙ্গে খারাপ করবে। সেটি আমেরিকা হোক কিংবা ভারত। ভারতের সঙ্গে আমাদের দীর্ঘ সীমান্ত রয়েছে। রয়েছে ৫৪টি নদীর উৎস। তাদের সঙ্গে সুন্দরবনসহ অসংখ্য স্বার্থ জড়িত। তাই তাদের সঙ্গে একটি কার্যকর সম্পর্ক অপরিহার্য। বর্তমানে বিএনপি-ভারত সম্পর্ক কিছুটা স্থবির অবস্থায় আছে। কারণ, ৫ আগস্টের পরও ভারতের পক্ষ থেকে সঠিক মূল্যায়ন করা সম্ভব হয়নি যে বাংলাদেশ ও বাংলাদেশিদের ভাবনা কী? তারপরও আমরা আশা করি ভারতের মতো একটা বৃহৎ দেশ এটি সংশোধন করে সুসম্পর্ক প্রতিষ্ঠায় এগিয়ে আসবে। ভবিষ্যতে তাদের সঙ্গেও বাস্তবসম্মত সম্পর্ক গড়ে তোলার পরিকল্পনা আমাদের রয়েছে।

আরেকটি বিষয় হলো, বর্তমান বিশ্বের ভূ-রাজনীতি মূল রাজনীতির গতিপথ নির্ধারণ করে। আগামীতে যে দলই ক্ষমতায় আসুক না কেন, রাষ্ট্রপরিচালনায় এমন একটি কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করতে হবে যে প্রত্যেকের সঙ্গে মর্যাদাপূর্ণ, একইসঙ্গে কার্যকর সম্পর্ক থাকে। সারা বিশ্বের রাজনীতি ভূ-রাজনীতি এবং বাণিজ্যের ওপর নির্ভরশীল। এই বাণিজ্যই হয়তো আগামী বিশ্বের নিয়ামক হবে।

 রোডম্যাপ অনুযায়ী আগামী ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হওয়ার কথা। কিন্তু বিভিন্ন সময় বিএনপির শীর্ষ নেতারা নির্বাচন নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। বিষয়টি কীভাবে দেখছেন?

মাহমুদা হাবীবা : সরকার নির্বাচন অনুষ্ঠানের সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে, প্রধান উপদেষ্টা এমনটি বলেছেন। তার উপদেষ্টারাও বিভিন্ন সময় খুব স্পষ্ট করে বলেছেন যে, যা-ই হোক না কেন আমরা ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন দেব। সেজন্য সরকারের পক্ষ থেকে যে ধরনের প্রস্তুতি দরকার, আমরা সেটিও দেখতে পাচ্ছি। তাহলে এই শঙ্কার কথা আসছে কোথা থেকে? এমন কোনো পরিস্থিতি বা অনাকাঙ্ক্ষিত কিছু ঘটিয়ে কিংবা রাজনৈতিক দলগুলোকে মুখোমুখি দাঁড় করানোর চেষ্টা চলছে, যাতে দেশের সামগ্রিক শান্তি-শৃঙ্খলা হুমকিতে পড়ে। মূলত একটি ঝুঁকি তৈরি করে নির্বাচনী পরিবেশকে অশান্ত করার চেষ্টা চলছে।

বিএনপি বলুন, জামায়াত বলুন কিংবা এনসিপি; আমাদের শরিক দলগুলো যারা যুগপৎ আন্দোলনে ছিলেন, আমরা সবাই কিন্তু লড়ছি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার জন্য। এখানে কেউ বলছেন গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় যেতে হলে আরও কিছু সংস্কার দরকার। কেউ বলছেন গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় যেতে হলে একটি স্থিতিশীল নির্বাচিত সরকার এনে তারপর সংস্কারটা পাশাপাশি চালানোর কথা। তবে, সবাই একমত— গণতান্ত্রিক উত্তরণ জরুরি।

কিন্তু মনে রাখতে হবে যারা বিগত ১৭-১৮ বছর ধরে দেশটা খুব প্রতাপের সঙ্গে শাসন করেছেন, তারা তাদের কাজের জন্য প্রয়োজনীয় টুলসও ডেভেলপ করেছিলেন। এই টুলসটা ছিল না কোথায়? এটা জনপ্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, গণমাধ্যমে আছে। ৫ আগস্টের পর আমরা মোটা অঙ্কের টাকা লুটপাটের কথা জেনেছি। সেই টাকা তো সম্পূর্ণ দেশের বাইরে যায়নি। কিছু টাকা রয়ে গেছে দেশে। এই টাকাগুলো আছে কাদের হাতে? যারা এখনো গ্রেপ্তার হননি এবং যারা দেশে অস্থিরতা সৃষ্টি করতে সক্ষম, তাদের হাতে।

dhakapost

আমরা প্রতিনিয়ত নানা ধরনের কর্মকাণ্ডের কথা শুনতে পাচ্ছি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তথ্য অনুযায়ী, বসুন্ধরার মতো জায়গায় প্রশিক্ষণও দেওয়া হয়েছে। কাজেই এই তথ্যের ওপর যদি আস্থা রাখি, তাহলে কতখানি ভয়াবহ অবস্থা, একবার ভাবেন! কেবল ট্রেনিং দেওয়ার মাঝে সীমাবদ্ধ না, বিভিন্ন মহলের উসকানিও আছে। রাজনৈতিক দলের সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের যে সুসম্পর্ক সেটিও ভেঙে দেওয়ার প্রচেষ্টা আছে। এমন কিছু তৈরি করা যেটি সরকারকে বিব্রত করে, রাজনৈতিক দলগুলোকে বিব্রত করে; মোটের ওপর নির্বাচনকে একটি হুমকি ও ঝুঁকির মধ্যে ফেলে।

সত্যিকার অর্থে ছয় মাস খুব দীর্ঘ সময়, আবার কোনো সময়ই না। কিন্তু যেকোনো পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নের জন্য ছয় মাস অনেক লম্বা সময়। এখানে আমাদের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বারবার বলেছেন, ষড়যন্ত্র-উসকানি দেওয়া হচ্ছে, সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। অশুভ শক্তি অন্তরালে কাজগুলো করছে। একটু খেয়াল করলে আপনি দেখবেন, বিভিন্ন দলের মধ্যে প্রকাশ্যে নানা ধরনের বাগযুদ্ধ চলছে, ব্যক্তিগত আক্রমণ চলছে। নানা রকম বিষয় আসছে। মনে হচ্ছে এরা কোনোদিন একসঙ্গে বসতে পারবে না। তারপরও ঐকমত্য কমিশনে তারা ঠিকই যাচ্ছেন, এক জায়গায় বসছেন। একটি সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে বেশ হাসিঠাট্টার মধ্য দিয়ে কাজগুলো চলছে।

 এখনো বিএনপির প্রার্থী বাছাই, নির্বাচনী ইশতেহারের বিষয়ে প্রকাশ্যে আপনারা কিছু বলছেন না। আসলে আপনাদের নির্বাচনী প্রস্তুতি কতদূর?

মাহমুদা হাবীবা : বর্তমানে বাংলাদেশে যাদের বয়স ৩৫ বছরের নিচে, তাদের প্রায় ৯৫ শতাংশ কখনো ভোট দিতে পারেননি। একটি জরিপে দেখা যায়, এবারের নির্বাচনে প্রায় ছয় কোটি নতুন ভোটার প্রথমবারের মতো ভোট দেবেন। ভোট অত্যন্ত জরুরি জিনিস। নির্বাচনের দাবি যেকোনো রাজনৈতিক দল করতে পারে। যারা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা এবং গণতান্ত্রিক উত্তরণের চেষ্টায় আছে, তারা বিএনপি হোক কিংবা আমাদের সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনের যারা শরিক, তাদের সঙ্গে তো বিগত সরকারের সখ্যতা ছিল না। তারাও যুদ্ধ করেছেন নাগরিক অধিকার ও একটি সুষ্ঠু নির্বাচন জন্য। ফলে নির্বাচন দিতেই হবে। আর এই কথাটা নির্বাচনমুখী দল হিসেবে বিএনপি প্রথম থেকেই বলে এসেছে।

বিএনপির বিরুদ্ধে অভিযোগ, আমরা শুধু নির্বাচন চাই। অথচ আমাদের (বিএনপি) চাওয়া ছিল— আহতদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করা এবং যোগ্যতা অনুযায়ী তাদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা; যে পরিবারগুলো সন্তান হারিয়েছে তাদের উপার্জনে অক্ষম সদস্যকে একটি সম্মানী ভাতা প্রদান করা এবং সামাজিকভাবে একটি অবস্থানে নিয়ে যাওয়া। পাশাপাশি সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত করা এবং সংস্কার কার্যক্রম পরিচালনা করা। এগুলো একটি আরেকটির সঙ্গে সাংঘর্ষিক নয়। প্রতিটি পাশাপাশি চলার মতো বিষয়। এক্ষেত্রে প্রচার করা হয় বিএনপি শুধু নির্বাচন চায়। মনে রাখতে হবে, জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে বিএনপি সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে। আপনারা জানেন, এটির জন্য সংবাদ মাধ্যমে আমাদের কতখানি ব্যাশিংয়ের শিকার হতে হয়েছে।

এবার আসি নির্বাচনী প্রস্তুতি প্রসঙ্গে। বিএনপির ৩১ দফার সংস্কার প্রস্তাবই মূলত একধরনের নির্বাচনী ইশতেহার। যেটি চূড়ান্ত করার পর সামনে নিয়ে আসব আমরা। ইতোমধ্যে বিএনপির যে প্রচারণাগুলো চলছে, সেখানে আমরা ১০০ থেকে ১৮০ দিনের মধ্যে বিএনপি কোন কোন মাইলফলক অর্জন করতে চায়, বিএনপির প্রতি জনসাধারণের প্রত্যাশাগুলো কী এবং আমাদের রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতিগুলো পয়েন্ট আকারে ধারাবাহিকভাবে দেওয়া শুরু করেছি। সামনে আরও আসবে। আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানও অসংখ্যবার বিএনপির নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি কিংবা সংস্কারের প্রতিশ্রুতি জনগণকে জানিয়েছেন। এগুলো সবই নির্বাচনের প্রস্তুতির অংশ।

আপনি হয়তো জানেন, ঢাকার শাহবাগে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের মহাসমাবেশে আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান প্রথমবার প্রকাশ্যে ভোট চেয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘তারুণ্যের প্রথম ভোট ধানের শীষের জন্য হোক’। এর মাধ্যমে আমরা একটি নির্বাচনী স্লোগান পেয়েছি।

৫ আগস্টের পর ভোটারদের মন-মানসিকতায় পরিবর্তন এসেছে। রাজনীতিতে একটি গুণগত পরিবর্তনও এসেছে। অন্তত বিএনপি এই জিনিসটা অনুধাবন করার চেষ্টা করছে। ক্লিন ইমেজ, যিনি মাঠে ছিলেন এতদিন, সত্যিকার অর্থে গণতন্ত্রের লড়াইয়ের সৈনিক, পাশাপাশি যিনি আমাদের নতুন ভোটার অর্থাৎ সবার মন-মানসিকতা ও চিন্তা-ভাবনার সঙ্গে সামঞ্জস্য করার সক্ষমতা যার আছে তাকেই দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হবে। এটি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের কমিটমেন্ট দলের নেতাকর্মীদের প্রতি, জনগণের প্রতি তো বটেই।

এখন সমস্যা যেটি দাঁড়িয়েছে সেটি হলো— বিএনপি একটি বৃহৎ দল। প্রতিটি সংসদীয় আসনে গড়ে দুই থেকে তিনজন মোটামুটি একই যোগ্যতাসম্পন্ন লোক আছেন। এক্ষেত্রে বিবেচ্য বিষয় হবে, অত্যন্ত ত্যাগী একজন নেতা যিনি ৫ আগস্ট-পরবর্তীতে চরিত্রটা বদলে ফেলেছেন, বিভিন্নভাবে সমালোচিত হয়েছেন; দেখা গেছে তিনি ততখানি আর পরিচ্ছন্ন থাকতে পারেননি, তাদের জন্য দুঃসংবাদ আছে।

এখন প্রতিটি সংসদীয় আসনেই বিভিন্ন ধরনের যাচাই-বাছাই চলছে। আর এই যাচাইয়ের কাজটা কিন্তু দল থেকে করা হচ্ছে না। থার্ড পার্টি দিয়ে করানো হচ্ছে। প্রতিটি আসনে সম্ভাব্য প্রার্থীদের রিপোর্ট তৈরি করা হচ্ছে। যাতে প্রভাব বিস্তারের কোনো সুযোগ না থাকে। রিপোর্টগুলো আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও স্থায়ী কমিটির সদস্যদের কাছে যাচ্ছে, উনারা যাচাই-বাছাই করছেন। শেষ পর্বে প্রার্থীদের সাক্ষাৎকার অনুষ্ঠিত হবে। অর্থাৎ প্রতিটি ধাপে ভিন্ন ভিন্নভাবে মূল্যায়ন করা হবে। এখানে জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে বিএনপির তুলনা চলে না। জামায়াত এখনই ৩০০ আসনে প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেছে। বাস্তবতা বিবেচনায় নির্বাচনের ছয় মাস আগে প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করা বিএনপির পক্ষে সম্ভব না।

Leave a Reply

আরো সংবাদ পড়ুন
© তরঙ্গ টিভি
ওয়েবসাইট ডিজাইন : ইয়োলো হোস্ট