1. info@www.tarangotv.com : TV :
বুধবার, ২২ অক্টোবর ২০২৫, ০৯:৩৫ অপরাহ্ন

মিথ্যার জালে প্রশাসনকে ঘিরে ফাঁদ: জাজিরার ভূমি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার?”

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ২১ অক্টোবর, ২০২৫
  • ১১ বার পড়া হয়েছে

শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ মেহেদী হাসান একজন দায়িত্বশীল সরকারি কর্মকর্তা, যিনি নিয়ম ও প্রমাণের ভিত্তিতে কাজ করার জন্য এলাকায় পরিচিত। কিন্তু সম্প্রতি তাঁকে ঘিরে এক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মহল মিথ্যা তথ্য ও বিভ্রান্তিকর প্রচারণা চালিয়ে প্রশাসনের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্নের চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

ঘটনার সূত্রপাত স্থানীয় এক সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত “ঘুষ ও অনিয়মের অভিযোগ” শিরোনামের প্রতিবেদনের মাধ্যমে। সেখানে দাবি করা হয়, জাজিরা উপজেলার মোহর আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক লিয়াকত হোসেন অভিযোগ করেছেন যে, ভূমি কর্মকর্তা মেহেদী হাসান তার কাছ থেকে ৮০ হাজার টাকা ঘুষ নিয়েছেন।

কিন্তু অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে এক ভিন্ন বাস্তবতা যেখানে ঘুষের অভিযোগের পেছনে লুকিয়ে আছে জমি জালিয়াতি ও প্রশাসন বিভ্রান্ত করার একটি পরিকল্পিত অপচেষ্টা।

জালিয়াতির ছক: আদালতের রায় বিকৃত করে নামজারি চেষ্টা

প্রশাসনিক সূত্রে জানা গেছে, শিক্ষক লিয়াকত হোসেন কিছুদিন আগে একটি নামজারির আবেদন নিয়ে জাজিরা ভূমি অফিসে আসেন। জমির মালিকানা প্রমাণের জন্য তিনি আদালতের একটি রায়ের কপি দাখিল করেন, যেখানে মূল রায়ে উল্লেখ ছিল ৩ শতাংশ জমি।

তবে আশ্চর্যের বিষয় হলো রায়ের ওই কপিতে হাতের লেখায় “৩ শতাংশ” পরিবর্তন করে “৩৭ শতাংশ” করা হয়। সহকারী কমিশনার (ভূমি) মেহেদী হাসান বিষয়টি যাচাইয়ের সময় জালিয়াতির ইঙ্গিত পান এবং সঙ্গে সঙ্গেই নামজারি প্রক্রিয়া স্থগিত করেন

এরপর থেকেই শিক্ষক লিয়াকত ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন এবং প্রশাসনিক কর্মকর্তা মেহেদী হাসানের বিরুদ্ধে মিথ্যা ঘুষের অভিযোগ ছড়িয়ে দেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

জাজিরা উপজেলা রাজনীতিবিদ ও স্থানীয়দের বরাত দিয়ে জানা গেছে, অভিযোগকারী লিয়াকত হোসেন নিজ বংশের প্রায় ১০-১২ জন আত্মীয়কে এলাকায় বসিয়ে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করেন। তিনি স্থানীয় এক মালিকের কাছ থেকে জমি কিনে অন্য পক্ষকে উচ্ছেদ ও দখলের চাপ সৃষ্টি করতে থাকেন। এতে এলাকায় উত্তেজনা দেখা দিলে স্থানীয় বাসিন্দারা তাঁর কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে শুরু করেন
কিন্তু অভিযোগ রয়েছে, তাঁর বিরুদ্ধে কেউ কথা বললেই তিনি দমনমূলক আচরণ করেন এবং ক্ষমতার প্রভাব খাটানোর চেষ্টা করেন।

ভূমি কর্মকর্তার বক্তব্য: “আইন অনুযায়ী কাজ করেছি” জাজিরা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ মেহেদী হাসান বলেন আমি সরকারি নিয়ম মেনেই কাজ করেছি। আদালতের রায়ের কপি বিকৃত করে জমির পরিমাণ বাড়িয়ে নামজারি করানোর চেষ্টা করা হয়েছিল। আমি সঙ্গে সঙ্গেই তা প্রত্যাখ্যান করেছি। এখন উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ ছড়ানো হচ্ছে।”

তিনি আরও জানান, প্রশাসনের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার এ ধরনের প্রচেষ্টা শুধু ব্যক্তি নয়, বরং রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের প্রতি আস্থা নষ্ট করার অপচেষ্টা

শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসক তাহসিনা বেগম এ বিষয়ে বলেন বিষয়টি তদন্তাধীন। যদি দেখা যায় কেউ উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে সরকারি কর্মকর্তার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতে চাইছে, তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। একইসঙ্গে প্রকৃত অনিয়ম থাকলেও তা আইন অনুযায়ী যাচাই করা হবে।”

ঘুষের অভিযোগ, সংবাদমাধ্যমে প্রচার ও জনমনে বিভ্রান্তি—সব মিলিয়ে ঘটনাটি এখন ‘সত্য বনাম ষড়যন্ত্রের’ সংঘর্ষে পরিণত হয়েছে।
তবে অনুসন্ধান ও প্রশাসনিক সূত্রের তথ্য বলছে—এই অভিযোগ শুধু একজন কর্মকর্তাকে নয়, বরং পুরো প্রশাসনিক কাঠামোকেই প্রশ্নবিদ্ধ করার একটি কৌশল

যদি প্রমাণিত হয় যে, এটি ছিল একটি পরিকল্পিত মিথ্যা অভিযোগ, তাহলে এটি হবে “সরকারি দায়িত্ব পালনে বাধা” এবং “রাষ্ট্রীয় কর্মকর্তা মানহানি”—যা আইনগতভাবে গুরুতর অপরাধ।

জাজিরা উপজেলার এই ঘটনাটি প্রমাণ করে, সত্যকে আড়াল করতে মিথ্যার জাল যতই ঘন হোক, প্রশাসনের স্বচ্ছতা ও আইন প্রয়োগের শক্তি শেষ পর্যন্তই সত্যকে সামনে নিয়ে আসে।

আরো সংবাদ পড়ুন
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত, আমাদের প্রকাশিত সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার অপরাধ।
ওয়েবসাইট ডিজাইন : ইয়োলো হোস্ট