দেশের শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে প্রকৌশল ডিগ্রি অর্জন করলেও চাকরির বাজারে তাদের জন্য যেন একেএকে দরজা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। বিপরীতে ‘ডিপ্লোমা সিন্ডিকেট’ ও ‘শর্টকাট’ প্রমোশনের খেলায় প্রকৌশল খাত দখল করে নিয়েছে এক বিশেষ গোষ্ঠী। ফলে ‘ইঞ্জিনিয়ার’ শব্দটি এখন মর্যাদার বদলে ব্যঙ্গের উপাধি হয়ে দাঁড়াচ্ছে—এমন ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিএসসি ডিগ্রিধারীরা।
শুক্রবার (২২ আগস্ট) রাজধানীর রমনায় ইনস্টিটিউট অব ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশে (আইইবি) অনুষ্ঠিত হয় ‘প্রকৌশলী অধিকার আন্দোলন’র প্রথম বার্ষিক সাধারণ সভা।
বক্তাদের অভিযোগ, সরকারি চাকরিতে দশম গ্রেডে ন্যূনতম যোগ্যতা স্নাতক ডিগ্রি হলেও প্রকৌশল খাতের উপসহকারী প্রকৌশলী পদে ১০০ শতাংশ কোটা ডিপ্লোমাধারীদের জন্য নির্ধারিত। নবম গ্রেডের সহকারী প্রকৌশলী পদেও প্রমোশনের নামে বিশেষ ছাড় দিয়ে তাদের একচ্ছত্র আধিপত্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
বক্তারা জানান, সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের ২৪৫টি সহকারী প্রকৌশলী পদের মধ্যে ১৬০টি বর্তমানে ডিপ্লোমাধারীদের দখলে। গণপূর্ত অধিদপ্তরে প্রমোশনের কোটা ৩৩ শতাংশ হলেও বাস্তবে ৪২ শতাংশ পদে আছেন ডিপ্লোমাধারীরা। একই সময়ে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়েও সিনিয়রিটির ক্ষেত্রে বিএসসি প্রকৌশলীদের জোর করে জুনিয়র বানিয়ে রাখা হচ্ছে।
সভায় বুয়েট, কুয়েট, রুয়েট ও চুয়েটের শিক্ষার্থীরা দীর্ঘদিনের তিন দফা দাবি আবারও জোরালোভাবে তুলে ধরেন। দাবিগুলো হলো—
১. সহকারী প্রকৌশলী পদে বাধ্যতামূলক যোগ্যতা হবে বিএসসি ডিগ্রি।
২. উপসহকারী প্রকৌশলী পদে শতভাগ কোটা বাতিল।
৩. ‘ইঞ্জিনিয়ার’ উপাধি সংরক্ষিত থাকবে কেবল বিএসসি ডিগ্রিধারীদের জন্য।
এসময় বক্তারা ইনস্টিটিউট অব ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশের (আইইবি) ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন।
প্রকৌশলী অধিকার আন্দোলনের সভাপতি এম ওয়ালি উল্লাহ বলেন, প্রকৌশলী অধিকার আন্দোলন শুধু ডিপ্লোমা সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে সোচ্চার হবে না বরং সামগ্রিকভাবে প্রকৌশল সেক্টরের বৈষম্য, অনিয়ম ও অকার্যকারিতা দূর করতে দৃঢ় ভূমিকা রাখবে। এ আন্দোলন প্রকৌশলীদের ঐক্যের এক ঐতিহাসিক উদাহরণ হয়ে থাকবে।