এদিকে, জাফরের এই পরিণতিতে আতঙ্ক ও দুশ্চিন্তায় ভেঙে পড়েছেন জাফরের বাবা, মা হাসিনা খাতুন ও স্ত্রী খাদিজা খাতুন। তার শিশু দুই ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। মুঠোফোনে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অ্যাপে নিজের যুদ্ধপোশাক পরে তোলা ছবি পাঠিয়েছেন জাফর। খায়রুল সরদার ছেলের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, ৫ মাস আগে ঢাকার একটি এজেন্সির মাধ্যমে সাইপ্রাসে যাওয়ার উদ্দেশে বাড়ি ছাড়েন জাফর। এজন্য তাকে দিতে হয় ৯ লাখ টাকা। কিন্তু প্রতারণা করে দালাল চক্র তাকে প্রথমে সৌদি আরবে নিয়ে যায়। সেখানে তাকে থাকতে হয় ২ মাস। এরপর দুবাই নিয়ে যায়। তারপর তাদের বিক্রি করা হয়। রাশিয়ায় যাওয়ার পর বলা হয় সেনা সদস্যদের কাপড় পরিষ্কার করতে হবে। কিন্তু তাদের প্রশিক্ষণ দিয়ে যুদ্ধে পাঠাচ্ছে।
খায়রুল আরও বলেন, এখন তার ছেলে কান্নাকাটি করছে। সে জানিয়েছে, যুদ্ধ করতে গিয়ে বাংলাদেশিদের একজন মারা গেছেন ও একজন আহত হয়েছেন। সেজন্য দেশে ফিরতে চাইছে। খায়রুল সরকারের কাছে ছেলেকে ফিরে পাওয়ার আকুতি জানিয়েছেন।
এদিকে, স্বামীর চিন্তায় শুধু কাঁদছেন জাফরের স্ত্রী খাদিজা খাতুন। তিনি বলেন, আমার স্বামী অনেক কষ্টে আছে। আমার স্বামীকে ফিরে পেতে চাই। কয়েকদিন আগে আমার সঙ্গে কথা হয়েছে। সে বলেছে, আমার সন্তানদের তুমি দেখে রেখ। মামাতো ভাই মাহাবুবুর রহমানের মাধ্যমে ঢাকার একটি এজেন্সির সঙ্গে যোগাযোগ হয় জাফরের। তবে মাহবুবুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, ঢাকার হাজি ক্যাম্প এলাকার তামান্না নামে এক নারীর সঙ্গে যোগাযোগ করে বনানীর ৪ নম্বর রোডের হাসান এজেন্সির মাধ্যমে বিদেশে গেছে জাফর। এজেন্সিতে জাফরের পাসপোর্ট প্রথমে জমা দেওয়া হয় সাইপ্রাসে যাওয়ার জন্য। সাইপ্রাসের ভিসা না হওয়ার কারণে ২ বছর পর বলে রাশিয়ায় লোক যাচ্ছে, রাশিয়ায় পাঠানো হবে। আমরা বলি রাশিয়া যুদ্ধের দেশ ওই জায়গা তো নিরাপদ নয়। তারা (এজেন্সি) বলে, নিরাপদ আছে ওই জায়গায় ক্লিনারের কাজ করবে। যুদ্ধের কাহিনী ওরা দেখতে পারবে না ও জানবেও না।
মাহবুব জানিয়েছেন, জাফরকে দেশে ফিরিয়ে আনতে তার পরিবারের পক্ষ থেকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করা হয়েছে।
Leave a Reply