গাইবান্ধা জেলার সাঘাটা থানায় সিজু মিয়ার মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ধামাচাপা দেওয়ার অভিযোগ ও সুষ্ঠু বিচারের দাবিতে বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী মানববন্ধন করেছেন।
শনিবার ২৬ জুলাই বিকেল ৫টার দিকে গাইবান্ধা জেলা পুলিশ সুপার এর কার্যালয়ের সামনে কয়েক শতাধিক মানুষ এ কর্মসূচিতে অংশ নেন।
নিহত সিজু মিয়া গাইবান্ধা সদরের দুলাল মিয়ার ছেলে। তিনি ছাত্র শিবিরের স্থানীয় একজন সক্রিয় কর্মী ছিলেন বলে জানা গেছে।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, সিজু গাইবান্ধা সদরের বাসিন্দা, তাহলে সে কেন সাঘাটা থানায় গিয়ে মোবাইল হারানোর জিডি করবে? কে বা কারা তাকে সেখানে নিয়ে গেল? থানার ভেতরে একজন সাধারণ নাগরিক নিরাপদ না থাকলে, দেশের আইন-শৃঙ্খলা কোথায় দাঁড়িয়েছে?
এসময় গাইবান্ধা জেলা ছাত্রশিবিরের সভাপতি রুম্মন ফেরদৌস বলেন, সিজু মেধাবী একজন কর্মী ছিলেন। তাকে নিয়ে অপপ্রচার চালিয়ে বলা হচ্ছে, সে সাঁতার জানত না। অথচ সে প্রতিদিন নদী পার হয়ে গরু চরাতো। আমি সোশ্যাল মিডিয়ায় এমন একটি ভিডিও দেখেছি যেখানে দেখা যাচ্ছে, থানার পুকুরে তাকে বাঁশ দিয়ে আঘাত করা হচ্ছে। এটি সুস্পষ্ট হত্যাকাণ্ড। আমরা সাঘাটা থানার ওসির দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।
বক্তারা অভিযোগ করেন, এ ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে ‘মানসিক ভারসাম্যহীন’ তত্ত্ব দাঁড় করিয়েছে পুলিশ। তারা অবিলম্বে স্বচ্ছ তদন্ত, জড়িতদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এবং নিহতের পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানান।
মানববন্ধনের একপর্যায়ে সেনাবাহিনীর একটি দল ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে উত্তপ্ত বাকবিতণ্ডা সৃষ্টি হয়। এরপর আন্দোলনকারীরা গাইবান্ধা-পলাশবাড়ী সড়ক অবরোধ করে যান চলাচল বন্ধ করে দেয়।
প্রায় এক ঘণ্টা সড়ক অবরোধ থাকার পর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ আশরাফুল আলম উপস্থিত হয়ে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলেন এবং ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের শাস্তির আশ্বাস দিলে অবরোধ তুলে নেওয়া হয়।
মানববন্ধনে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক কর্মী, শিক্ষার্থী ও বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ অংশ নেন।
উল্লেখ্য, পুলিশ দাবি করেছে, কয়েকদিন আগে মোবাইল হারানোর জিডি করতে গিয়ে সিজু সাঘাটা থানায় গেলে তিনি আচমকা কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যদের উপর ছুরি দিয়ে হামলা করেন এবং পালিয়ে যাওয়ার সময় পুকুরে লাফ দেন। একদিন পর তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তবে নিহতের পরিবার ও এলাকাবাসীর দাবি, এটি পূর্বপরিকল্পিত হত্যা।
ঘটনাটি নিয়ে এলাকায় তীব্র উত্তেজনা বিরাজ করছে।
Leave a Reply