সাভারে ছিনতাইকারী সন্দেহে গণপিটুনিতে সাব্বির (১৯) নামে এক যুবককের মৃত্যু হয়েছে। এর আগে গত ৯ আগস্ট গণপিটুনি দিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেন পথচারীরা।
রোববার (১৭ আগস্ট) দুপুরে সাভার মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মোতাছিম বিল্লাহ ঢাকা পোস্টকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন। এর আগে শনিবার রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই যুবকের মৃত্যু হয়।
নিহত সাব্বির সাভার পৌর এলাকার ব্যাংক কলোনী মহল্লার মানিক হাজীর ছেলে।
পুলিশ জানায়, শনিবার (৯ আগস্ট) সকালে জরুরি সেবা ৯৯৯ নাম্বারে কল করেন এক পথচারী। পরে পুলিশ সাভার পৌর এলাকার সিআরপি মহল্লা থেকে ওই যুবককে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে। সেসময় রেশমা বেগম নামে এক নারী বাদী হয়ে একটি মামলা করেন ওই যুবককে বিরুদ্ধে।
ওই মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, মামলার বাদী রেশমা বেগম ও তার স্বামী কাজীম উদ্দিন এবং ইমরান হোসেন শুক্রবার (৮ আগস্ট) রাতে জয়পুরহাট থেকে সাভারের উদ্দেশ্যে রওনা হন। এতে পরের দিন শনিবার ভোর ৫টা ৪০ মিনিটে গাড়ি তাদের ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের সাভার পৌর এলাকার সিআরপিতে নামিয়ে দেন। এ সময় আগে থেকে ওত পেতে থাকা সাব্বির একটি সুইচ গিয়ার চাকু দিয়ে তাদের গতিরোধ করে এবং মালামাল লুট করে নিতে চায়। সে সময় রেশমার ছেলে ইমরানকে চাকু দিয়ে আঘাত করে এবং স্বামী কাজীম উদ্দিনকে হাতের আঙ্গুলে কামড় দেন। সেসময় ইমরান ও কাজীম উদ্দিনসহ স্থানীয়দের সহযোগিতায় সাব্বিরকে ধরে ফেলে। তখন উত্তেজিত লোকজন সাব্বিরকে বেধরক মারধর করে জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে কল করে পুলিশে সোপর্দ করে।
তবে নিহত সাব্বিরে বাবা মানিব হাজী ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমার ছেলে হোন্ডার গ্যারেজে কাজ করতো। সে শুক্রবার (৮ আগস্ট) রাতে আমার সঙ্গে রাগ করে বাড়ি থেকে বের হয়ে যায়। পরে আমি জানতে পারি আমার ছেলে এক ব্যক্তির কাছে সিগারেট চেয়েছে। সেই সূত্র ধরেই মারধরের ঘটনা ঘটে। পরে আমার ছেলেকে পিটুনি দিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। এরপর গতকাল সোহরাওয়ার্দী মেডিকেলে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আমার ছেলের মৃত্যু হয়েছে। আমি থানায় এসেছি, আজ আমার ছেলের মরদেহ হাসপাতাল থেকে হস্তান্তর করা হবে।
ছিনতাই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সাভার মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মোতাছিম বিল্লাহ ঢাকা পোস্টকে বলেন, জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে ফোন পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। সেসময় ওই যুবককে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে এবং রেশমা বেগম নামে এক নারী একটি মামলা করেন।
সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জুয়েল মিঞা ঢাকা পোস্টকে বলেন, সাব্বিরকে পুলিশে সোপর্দ করার সময় একটি চাকু জব্দ করা হয়েছে। সাব্বিরের বিরুদ্ধে আগে একটি চুরির মামলা ছিল। যুবককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় সাভার মডেল থানায় মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।