
প্রতিষ্ঠানের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি:
সিরাজউদ্দিন সরকার বিদ্যানিকেতন এন্ড কলেজ টঙ্গী, গাজীপুরে অবস্থিত একটি বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ১৯৮৭ সালে স্থানীয় শিক্ষাবিদ শাহাজ উদ্দিন সরকার কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত এই বিদ্যালয়টি প্রাথমিক থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত শিক্ষা প্রদান করে এবং ২০১৩ সাল থেকে কলেজ পর্যায়ে উন্নীত হয়েছে।
ঐতিহাসিক পটভূমি:
প্রতিষ্ঠাকাল-১৯৮৭ (বাংলা ১৩৯৪),
প্রথম শিক্ষার্থী সংখ্যা-৮৭ জন,
মূল উদ্দেশ্য- টঙ্গী ও আশেপাশের এলাকার শিশু-কিশোরদের মানসম্মত শিক্ষা প্রদান, বিশেষ করে মেয়েদের শিক্ষায় উৎসাহ প্রদান।
উল্লেখযোগ্য মাইলফলক- ১৯৯৫ সালে বৃত্তিমূলক বিভাগ চালু, ২০০৫ সালে প্রথমবারের মতো এসএসসি পরীক্ষায় ১০০% পাসের রেকর্ড, ২০১৩ সালে কলেজ শাখার অনুমোদন।
নামকরণের তাৎপর্য:
প্রতিষ্ঠানটির নাম “সিরাজউদ্দিন সরকার” রাখা হয়েছে স্থানীয় বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও সমাজসেবক সিরাজউদ্দিন সরকার এর স্মরণে। তিনি ১৯৭০‑এর দশকে টঙ্গীর গ্রামীণ এলাকায় শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য অবদান রেখেছিলেন। নামটি শিক্ষা ও সামাজিক উন্নয়নে তাঁর আদর্শকে ধারণ করে।
:শিক্ষা কার্যক্রম ও পাঠ্যক্রম:
প্রাথমিক (শ্রেণী ১‑৫) বাংলা, ইংরেজি, গণিত, বিজ্ঞান, সামাজিক বিজ্ঞান।
নির্মাণ (শ্রেণী ৬‑৮)-উপরোক্ত বিষয়গুলোর সাথে তথ্যপ্রযুক্তি ও শিল্পকলা।
দ্বিতীয় স্তর (শ্রেণী ৯‑১০)- বিজ্ঞান, ব্যবসায় শিক্ষা, মানবিক বিভাগ।
কলেজ (১১‑১২)- বিজ্ঞান (বিজ্ঞান বিভাগ), ব্যবসায় শিক্ষা (বিএসএস), মানবিক (বিএ) সবই বাংলাদেশ কারিকুলামের অধীনে।
বৃত্তিমূলক কোর্স- কম্পিউটার অ্যাপ্লিকেশন, হস্তশিল্প, নার্সিং সহায়তা।
সহযোগিতা প্রদানকারী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান:
স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা- আলহাজ্ব গিয়াস উদ্দিন সরকার, আলহাজ্ব নজরুল ইসলাম।
সামাজিক সংগঠন- টঙ্গী উন্নয়ন সংস্থা, রোটারি ক্লাব, গাজীপুর।
সরকারি বিভাগ- গাজীপুর জেলা শিক্ষা অফিস, টঙ্গী পৌরসভা।
ব্যক্তিগত দাতা- শাহাজ উদ্দিন সরকারের পরিবার, স্থানীয় ব্যবসায়ীগণ।
সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অবদান:
প্রতি বছর প্রতিষ্ঠানটি “টঙ্গী উৎসব” নামে একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে, যেখানে শিক্ষার্থীদের নৃত্য, গান, নাটক ও কবিতা প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়াও, বিনামূল্যে স্বাস্থ্য শিবির, কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কর্মশালা এবং দরিদ্র শিক্ষার্থীদের বৃত্তি প্রদান করা হয়।
জাতীয় স্বীকৃতি ও প্রয়োজনীয় প্রতিকার:
বর্তমান স্বীকৃতি- বাংলাদেশ শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক অনুমোদিত এবং ২০১৫ সালে “বেস্ট স্কুল” পুরস্কার প্রাপ্ত।
প্রয়োজনীয় দাবী :
1. আধুনিক শ্রেণীকোঠা ও ল্যাব নির্মাণের জন্য সরকারি অনুদান।
2. শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ ও পেশাগত উন্নয়নের জন্য বৃত্তি।
3. কলেজ পর্যায়ে নতুন বিষয় (ইঞ্জিনিয়ারিং, আইটি) অন্তর্ভুক্ত করার জন্য বিশেষ তহবিল।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ও সুপারিশ:
শিক্ষা সম্প্রসারণ- ২০২৮ সালের মধ্যে কলেজ শাখায় বিজ্ঞান ও ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে আরও দুটি নতুন বিষয় যোগ করা।
উপকাঠামো উন্নয়ন- ২০২৬ সালের মধ্যে একটি আধুনিক মাল্টিমিডিয়া কেন্দ্র ও খেলার মাঠের সংস্কার।
সম্প্রদায় সংযোগ- স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সাথে অংশীদারিত্বে ইন্টার্নশিপ প্রোগ্রাম চালু করা।
বৃত্তি কর্মসূচি- মেধাবী ও দরিদ্র শিক্ষার্থীদের জন্য “সিরাজউদ্দিন বৃত্তি” প্রবর্তন।
উপসংহার:
সিরাজউদ্দিন সরকার বিদ্যানিকেতন এন্ড কলেজ টঙ্গীর শিক্ষা ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে। এর ঐতিহ্য, নামকরণের তাৎপর্য এবং স্থানীয় সহযোগিতা এটিকে জাতীয় স্বীকৃতির যোগ্য করে তুলেছে। যথাযথ সরকারি সহায়তা ও সম্প্রদায়ের অংশগ্রহণে এই প্রতিষ্ঠানটি আরও উন্নত শিক্ষা কেন্দ্র হিসেবে বিকাশ লাভ করবে বলে আশা করা যায়
© ২০২০-২০২৫ তরঙ্গ টিভি, সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত, আমাদের প্রকাশিত সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার অপরাধ।