সিরাজগঞ্জ ও বগুড়ার বিভিন্ন উপজেলার বেশ কয়েকটি গ্রামে খোঁজ নিয়ে এমন খবর পাওয়া গেছে। আশানুরূপ দাম না পেয়ে মাদরাসায় দান করে দিয়েছেন অনেকে। আবার কোথাও কোথাও মাটিতে চামড়া পুতে দেওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। এদিকে চামড়ার দাম না পেয়ে হতাশ কোরবানি দাতারা। তাদের ভাষ্য, এটা গরীবের হক। কিছু মুনাফালোভী মানুষ সিন্ডিকেট করে চামড়ার দাম নিয়ন্ত্রণ করছে।
পরে কৌশলে কম দামে চামড়া কিনে নিবে। তারা বলেন, চামড়ার জুতা, বেল্ট, ব্যাগ কিনতে অনেক টাকা লাগে। তাহলে চামড়ার এত কম দাম হবে কেন।
শনিবার দুপুর ২টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত বিভিন্ন এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এবছর চামড়ার মৌসুমী ক্রেতা আসেনি। কোথাও ক্রেতা গেলেও চামড়ার দাম বলেছে খুব কম। ফলে বাধ্য হয়ে কম দামে বিক্রি করতে হয়েছে। তবে বেশির ভাগ মানুষ মাদরাসায় চামড়া দান করেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন মন্তব্য করেন চামড়া ব্যবসায়ীরা মাদরাসায় থেকে পড়ে কম দামে চামড়া কিনে নিবে। সেজন্য তারা বাড়ি বাড়ি যায়নি।
বিকাল তিনটায় মেঘাই গ্রামের কয়েক জনের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, গরুর চামড়া মাটিতে রাখা আছে। তাঁরা বলেন চামড়া কিনতে কেউ আসেনি। ক্রেতা না পেলে হয়তো মাটিতে পুতে ফেলতে হবে। নতবুা গ্রামের মাদরাসার এতিমখানায় দিয়ে আসবেন।
সোনামুখী গ্রামের বাবলু মিয়া বলেন, চামড়া কিনতে কেউ আসেনি। ভাবছি মাদরাসায় দিয়ে দেব। এমন চিত্র উপজেলার সর্বত্র। কোথাও কোথাও ক্রেতা থাকলে চামড়া বিক্রি হয়েছে গরু-মহিষ ১০০ থেকে ৩০০ টাকায়। ছাগল-ভেড়া ৫ থেকে ২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
নাটুয়ারপাড়া গ্ৰামের হেলাল খান বলেন, হয়তো চামড়া ক্রেতারা সিন্ডিকেট করে চামড়া ক্রয় করছে না। পরে ঠিকই কম দামে চামড়া কিনবে। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন চামড়া বিক্রির টাকাটা গরীবদের হক। কিন্তু দূর্ভাগ্য কৌশলে গরীবদের এই হক নষ্ট করছে কিছু মানুষ। তিনি আরও বলেন চামড়ার জুতা, বেল্ট এর দাম তো অনেক। তাহলে চামড়ার দাম কেন থাকবে না।
মেঘাই গ্রামের সোলায়মান হোসেন মেম্বার
বলেন, আমরা চামড়া বিক্রি করি না। গ্রামের সব চামড়া সংগ্রহ করে প্রকাশ্য নিলামে বিক্রি করে সেই টাকা মাদরাসার এতিমখানায় দেওয়া হয়।
কাজিপুর প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম বলেন, সবকিছুর দাম বাড়তেছে তাহলে চামড়ার দাম বাড়বে না কেন। অথচ চামড়াজাত পণ্যের দাম অনেক বেশি। আমার মনে হয়, সিন্ডিকেট করে চামড়ার দাম কমিয়ে রাখা হচ্ছে। এই সিন্ডিকেট ভাঙা দরকার। কারণ চামড়া এক সময় বাংলাদেশের প্রধান রপ্তানি পণ্য ছিল। চামড়ার দাম বাড়লে বৈদেশিক মুদ্রা দেশে আসবে। চামড়ার টাকা গরীব দুস্থদেরকে দেওয়া হতো। চামড়ার মূল্য কমে যাওয়ায় গরীবের হক নষ্ট হচ্ছে।
কাজিপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার দেওয়ান আকরামুল হক বলেন, সরকার এবছর চামড়ার ভালো দাম দিয়েছে। কেউ যদি ইচ্ছা করে চামড়ার দাম কারসাজি করে তথ্য প্রমান পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে