জীবনে একদিনও কৃষিকাজ না করেও হয়েছেন কেন্দ্রীয় কৃষক লীগের সহ-সভাপতি। ফরিদপুর-১ (মধুখালী-বোয়ালমারী-আলফাডাঙ্গা) আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চাইতে চেয়েছিলেন তিনি। এবার আবার রাজনৈতিক রঙ বদলে বিএনপিতে নাম লেখানোর চেষ্টা চালাচ্ছেন বহুল আলোচিত আরিফুর রহমান দোলন।
দোলন ছিলেন ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেয়াই ও সাবেক স্থানীয় সরকার মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেনের ঘনিষ্ঠ ক্যাশিয়ার। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন দপ্তরে তদবীর বাণিজ্য করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। ফরিদপুরের আলোচিত রুবেল-বরকত চক্রের অন্যতম সহযোগী হিসেবেও তার নাম উঠে এসেছে।
২০২৪ সালের ৫ মার্চ আড়াই হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের মামলায় দোলনকে আদালত জেল হাজতে পাঠায়। পরে তিনি জামিনে মুক্তি পান। তবে ২০২৫ সালের ৫ আগস্টের পর রাজধানীর পল্টনসহ বিভিন্ন থানায় তার বিরুদ্ধে একাধিক হত্যা মামলা হয়। এসব মামলায় জামিন না নিয়ে তিনি আত্মগোপনে রয়েছেন।
প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে দোলনের দাপট ছিল একচ্ছত্র। অভিযোগ রয়েছে, বিদেশে কর্মী পাঠানোর জন্য প্রতিটি নিয়োগে তিনি ১০-১৫ হাজার টাকা করে ঘুষ আদায় করতেন। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে থাকাকালীনও তিনি ঠিকাদারি কাজে ১০ শতাংশ কমিশন ছাড়া কোনো কাজ হতে দেননি। নূর আলীর জনশক্তি রপ্তানি সিন্ডিকেটে দোলনের প্রতিষ্ঠান ক্যারিয়ার ওভারসীস ছিল ১০ শতাংশ মালিকানায় যুক্ত।
এছাড়া সাবেক ফরিদপুর এসপি সুভাষ চন্দ্র সাহার সঙ্গে পুলিশ নিয়োগ বাণিজ্যেও তার সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ রয়েছে। এ ঘটনায় সুভাষের কাছ থেকে ৮ কোটি টাকার বেশি উদ্ধার হলেও দোলন ধরা-ছোঁয়ার বাইরে থেকে যান।
দোলনের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগও রয়েছে। ২০২৫ সালের ২৭ জানুয়ারি রাজধানীর মহানগর দায়রা জজ আদালতে এক নারী বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে দীর্ঘ ৫ বছর শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন, গর্ভপাত করানো ও ভিডিও ধারণ করে হুমকি দেওয়ার অভিযোগে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেন। মামলার নম্বর—১৫/২৫।
রাজনৈতিক অঙ্গনের সংশ্লিষ্টরা বলছেন, হাওয়া ভবনের ঘনিষ্ঠ থেকে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা হওয়া দোলন এখন ৫ আগস্টের পর বিএনপিতে ভিড়তে তৎপর।
এ বিষয়ে দোলন দাবি করেন, “আমি রাজনীতি ও সাংবাদিকতা করি। প্রতিপক্ষ আমাকে ফাঁসাতে অপপ্রচার চালাচ্ছে।