
দেশব্যাপী টাইফয়েড জ্বর প্রতিরোধে আগামী ১২ অক্টোবর ২০২৫ থেকে শুরু হচ্ছে জাতীয় টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইন, যা চলবে ১৩ নভেম্বর ২০২৫ পর্যন্ত। সরকারের সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচি (EPI) ও ইউনিসেফের সহযোগিতায় আয়োজিত এই ক্যাম্পেইনে ৯ মাস থেকে ১৫ বছরের কম বয়সী সব শিশুকে একটি করে টাইফয়েড টিকা বিনামূল্যে প্রদান করা হবে।
পাবনা জেলা সিভিল সার্জন ডা. মোঃ আবুল কালাম আজাদ জানিয়েছেন, জেলার ৭,৭৪,৮০৯ জন শিশুকে টিকা দেওয়ার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।
জেলার ২,৯৭৭টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীরা ১২ থেকে ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত নিজ নিজ বিদ্যালয় থেকেই এই টিকা গ্রহণ করতে পারবে।
অন্যদিকে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বাইরের ৯ মাস থেকে ১৫ বছরের কম বয়সী শিশুরা ১ থেকে ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত জেলার ১,৮৬০টি ইপিআই কেন্দ্রে টিকা নিতে পারবে।
পাবনা জেলা সদরসহ সকল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, পাবনা ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল, এবং পাবনা, ঈশ্বরদী, বেড়া ও সুজানগর পৌরসভায় প্রতিদিন (সরকারি ছুটির দিন ব্যতীত) এ টিকাদান কার্যক্রম পরিচালিত হবে।
রেজিস্ট্রেশন ও টিকা কার্ড ডাউনলোড পদ্ধতি টিকা নিতে হলে অভিভাবকদের জন্ম নিবন্ধনের ১৭ সংখ্যার তথ্য ব্যবহার করে www.vaxepi.gov.bd ওয়েবসাইটে রেজিস্ট্রেশন করে টিকা কার্ড ডাউনলোড করতে হবে। যাদের জন্ম নিবন্ধন এখনো হয়নি অথবা বয়স ১৫ বছরের বেশি, তাদেরকে স্থানীয় স্বাস্থ্য সহকারীর সহযোগিতা নেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে।
টাইফয়েড: প্রতিরোধযোগ্য একটি রোগ
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, টাইফয়েড হলো একটি ব্যাকটেরিয়াজনিত সংক্রামক রোগ, যা সাধারণত দূষিত পানি ও খাদ্য গ্রহণের মাধ্যমে ছড়ায়। প্রতি বছর বিশ্বে প্রায় ৯০ লাখ মানুষ এই রোগে আক্রান্ত হন, যার মধ্যে ১ লাখ ১০ হাজারেরও বেশি মৃত্যুবরণ করে। বাংলাদেশে এই রোগের প্রাদুর্ভাব তুলনামূলকভাবে বেশি এবং ১৫ বছরের নিচে বয়সী শিশুরা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে।
টাইফয়েডের সাধারণ উপসর্গের মধ্যে রয়েছে: জ্বর,
মাথাব্যথা, পেটব্যথা, ক্ষুধামন্দা, শারীরিক দুর্বলতা,
গণমাধ্যমের প্রতি আহ্বান।
গণমাধ্যম কর্মীদের উদ্দেশে সিভিল সার্জন ডা. মোঃ আবুল কালাম আজাদ বলেন, “টাইফয়েড প্রতিরোধে টিকার গুরুত্ব ও কার্যকারিতা সম্পর্কে জনসাধারণকে সচেতন করতে হবে। গুজব প্রতিরোধে গণমাধ্যমের ইতিবাচক ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”
তিনি আরও জানান, সরকারের ইপিআই কর্মসূচির আওতায় ব্যবহৃত এই টাইফয়েড টিকা নিরাপদ, কার্যকর এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) অনুমোদিত।
প্রেস ব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন: মোঃ জাহাঙ্গীর আলম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক), ডাঃ রাশেদুল বারী, প্রতিনিধি, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO), সাদিক আহমেদ, সহকারী পুলিশ সুপার, সুজানগর সার্কেল, মোঃ খায়রুল কবির, ডেপুটি সিভিল সার্জন, মোঃ সামিউল আলম, সিনিয়র তথ্য অফিসার, আখতারুজ্জামান আখতার, সভাপতি, পাবনা প্রেসক্লাব। সভাপতিত্ব করেন সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ আবুল কালাম আজাদ।