1. tv@tarangotv.com : তরঙ্গ টিভি : তরঙ্গ টিভি
  2. info@www.tarangotv.com : তরঙ্গ টিভি :
শনিবার, ০২ অগাস্ট ২০২৫, ০৫:২৪ অপরাহ্ন

ঠাকুরগাঁওয়ে মাত্র ১০ টাকায় মামলা নিষ্পত্তি হয় যে আদালতে

প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ২০ মে, ২০২৫
  • ২৯ বার পড়া হয়েছে

গ্রাম আদালত। যেখানে নেই কালো গাউন পরা উকিল-মোক্তার-পেশকার। তবে রয়েছে লাল সালু বেষ্টিত এজলাস, কাঠগড়া। কিন্তু নেই ১৪ শিকের গারদ। গ্রামের মানুষ যাতে সহজেই অল্প খরচে সুষ্ঠু বিচার পায় সেজন্য দেশের প্রতিটি ইউনিয়ন পরিষদে ‘গ্রাম আদালত’ গঠন করা হয়। এ আদালত প্রতিষ্ঠার কয়েক বছর ঠিকঠাক চললেও বর্তমানে মানুষ তা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন। এতে করে মামলার জটে বিপর্যস্ত হচ্ছে বিচারাঙ্গন।

তবে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা প্রশাসন মনে করছে সঠিকভাবে গ্রাম আদালত বাস্তবায়ন হলে কমে আসবে মামলার জটিলতা। মামালার জট ও বিচারাঙ্গনে বিশৃঙ্খলা, দুর্ভোগ কমাতে ও সরকারের সেবার মান সাধারণ মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়ার ন্যায় বিচার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে এরইমধ্যে গ্রাম আদালত বিষয়ক প্রশিক্ষণ শুরু হয়েছে।

সেবা ও সমাধান পেয়ে জনগণও হচ্ছে খুশি, বাড়ছে আস্থা। ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার ২২টি ইউনিয়ন পরিষদে গঠিত গ্রাম আদালত ধীরে ধীরে সাধারণ মানুষের আস্থার প্রতীক হয়ে উঠছে।

এক সময় গ্রাম আদালতের প্রতি মানুষের আস্থা ছিল প্রচুর। যেকোনো অভিযোগ গ্রাম আদালতে দিলে ফরিয়াদী-প্রতিবাদী উভয়েই ও মজলিসে উপস্থিতি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান, মেম্বার এবং গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ বাদী-বিবাদী সপক্ষে প্রমাণ ও সাক্ষী-সাবুদ হাজির করেন। তারা উভয়ের কথা গভীর মনোযোগ সহকারে শোনেন এবং মজলিশের সামনে ভাবগম্ভীর পরিবেশে রায় দেন।

আর সর্বসম্মতিক্রমে ঘোষিত এ রায় উভয়পক্ষ মেনেও নিতেন। কারণ এই ‘গ্রাম আদালত-এর রয়েছে আইনগত শক্ত ভিত্তি। গ্রামে বসবাসকারী প্রান্তিক পর্যায়ের মানুষের আইনগত প্রতিকার লাভের জায়গা হিসেবে ক্রমেই আস্থা লাভ করছে গ্রাম আদালত। নামমাত্র ১০ থেকে ২০ টাকা খরচে ছোটখাটো অপরাধের বিচার নিষ্পত্তি হচ্ছে এই আদালতে।

মঙ্গলবার (২০ মে) দুপুরে সদর উপজেলা পরিষদ হল রুমে গ্রাম আদালত প্রশিক্ষণের কার্যক্রাম শুরু হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) খাইরুল ইসলাম।

প্রশিক্ষণে দেওয়ানী মামলায় ২০ টাকা এবং ফৌজদারীতে ১০ টাকায় ৭ থেকে ৯০ দিনের মধ্যে মামলা নিষ্পত্তি হয় বলে জানানো হয়। উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত এই প্রশিক্ষণে সদরের রাজাগাঁও, আউলিয়াপুর, শুখানপুকুরী, গড়েয়া, চিলারং, রহিমানপুর ইউনিয়নের প্রতিনিধিদের গ্রাম আদালত গঠন, ফৌজদারী ও দেওয়ানী মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি সম্পর্কে ধারণা দেওয়া হয়।

দেশের আদালতগুলোর মামলা জট আর দীর্ঘ সময় চলমান হওয়ায় অনেকেই ইচ্ছে থাকলেও বিচার পেতে শরণাপন্ন হতে চান না আদালতে। পাশাপাশি মামলা চালাতে প্রয়োজন হয় অর্থের, যা সম্ভব হয় না দেশের গ্রামীণ জনপথের অধিবাসীদের। কিন্তু গ্রামীণ জনপথের নিম্ন আয়ের মানুষদের সঠিক বিচার প্রাপ্তিতে আশার আলো জাগিয়েছে ভিন্নধর্মী এক আদালত বা বিচার ব্যবস্থা।

সেই ভিন্নধর্মী আদালত হলো গ্রাম্য আদালত। গ্রামাঞ্চলের ছোট ছোট দেওয়ানী ও ফৌজদারী মামলা নিষ্পত্তির জন্য ইউনিয়ন পরিষদের আওতায় গঠিত হয় এই আদালত। এই আদালতে গ্রামাঞ্চলের সুবিধা বঞ্চিত মানুদের নানা বিষয়ে সুবিচার পাওয়ার সুযোগ সৃষ্টি করে দেয়। এখতিয়ার সম্পূর্ণ এলাকার জনগণ ফৌজদারী হলে দুই টাকা এবং দেওয়ানী হলে চার টাকা দিয়ে নিজ ইউনিয়ন পরিষদের গ্রাম আদালতে এই মামলা দায়ের করতে পারেন। এই আদালতে বিচার পাওয়ার জন্য কোনো আইনজীবীর প্রয়োজন হয় না খরচের। মুখোমুখি হতে হয় না বাদী বা বিবাদীর কারোরই। পড়তে হয় না বিচার প্রাপ্তিতে সময়ের ভোগান্তিতে। স্থানীয় ইউপি সদস্য এবং গন্যমান্য বিচারকের উপস্থিতিতে বসে এই আদালত।

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) খাইরুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, গ্রাম আদালত থেকে সুফলভোগীর সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। ছোটখাটো অনেক বিবাদের মীমাংসা এখন গ্রাম আদালতের মাধ্যমে সম্ভব হচ্ছে। সাধারণ মানুষ যাতে আরো সহজভাবে বিচার পাই এজন্য গ্রাম আদালত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। গ্রাম আদালত বর্তমানে মামলার চাপ হ্রাসে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করছে।

Leave a Reply

আরো সংবাদ পড়ুন
© তরঙ্গ টিভি
ওয়েবসাইট ডিজাইন : ইয়োলো হোস্ট