1. tv@tarangotv.com : তরঙ্গ টিভি : তরঙ্গ টিভি
  2. info@www.tarangotv.com : তরঙ্গ টিভি :
শনিবার, ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০২:১৫ অপরাহ্ন

চর এলাহী ঘাট চাঁদা যায় প্রশাসন ও বিএনপি নেতাদের পকেটে, অডিও ভাইরাল

জেলা প্রতিনিধি নোয়াখালী
  • প্রকাশিত: রবিবার, ২৪ আগস্ট, ২০২৫
  • ১০ বার পড়া হয়েছে

নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার চর এলাহী ঘাটকে ঘিরে চাঞ্চল্যকর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। মাছ, শাকসবজি ও মাদকের বড় চালান থেকে শুরু করে প্রতিদিনের ঘাটের চাঁদার টাকার ভাগ-বাটোয়ারা যায় জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের শীর্ষ প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও রাজনৈতিক নেতাদের পকেটে—এমন বিস্ফোরক অডিও ভাইরাল হয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। বর্তমানে এটি “টক অব দ্য নোয়াখালীতে” পরিণত হয়েছে।

৫ আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের আগে চর এলাহী ঘাট নিয়ন্ত্রণে ছিল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুর রাজ্জাকের হাতে। বর্তমানে তিনি হত্যা মামলাসহ বিভিন্ন মামলায় কারাগারে রয়েছেন।

প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, ঘাটটি ইজারা নিয়েছিলেন ইউনিয়ন যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক শেখ বেলাল। তবে গণঅভ্যুত্থানের পর ঘাটের নিয়ন্ত্রণ নেন উপজেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক নুরুল আলম সিকদারের অনুসারী ইব্রাহিম তোতা ও তার বাহিনী।

ভাইরাল হওয়া অডিওতে নোয়াখালী জেলা ছাত্রদলের সাবেক নেতা ইস্কান্দার মির্জা ও ঘাট কেরানি সেলিমের কথোপকথনে শোনা যায়—চর এলাহী ঘাটের বোট মালিকদের আয়ের ২০ শতাংশ প্রতিদিন ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাস্টারের কাছে জমা দিতে হয়। পরে ওই টাকা বিএনপির উপজেলা, জেলা নেতা, ইউএনও, ডিসি ও ওসি-এসপির কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়।

ইস্কান্দার মির্জা দাবি করেন, তিনি একাই এ পর্যন্ত প্রায় ১৪ লাখ টাকা চাঁদা দিয়েছেন। কথোপকথনে আরও জানা যায়, ইব্রাহিম তোতা, ইসমাইল তোতা, তাদের স্বজনরা বোট চালালেও কমিশন না দিয়েই চলে আসছেন।

অন্য এক অডিওতে ইস্কান্দার মির্জা কথিত সাংবাদিক কামালের সঙ্গে আলাপে বলেন, প্রথমে তার কাছ থেকে ৩০ শতাংশ কমিশন দাবি করা হয়েছিল। সে সময় তার বোট বন্ধও করে দেওয়া হয়। ইব্রাহিম তোতা ও ইসমাইল তোতা তাকে সরাসরি জানান, এসব টাকা উপজেলা বিএনপির নেতা নুরুল আলম সিকদার ও প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ে ভাগ করে দেওয়া হয়। মির্জার ভাষ্যমতে, এ ইস্যুতেই তার নেতা আবদুল মতিন তোতাকে হত্যা করা হয়েছে।

কোম্পানীগঞ্জের চর এলাহী ঘাটকে ঘিরে চাঁদাবাজি, আধিপত্য বিস্তার আর রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে এক অনিশ্চিত পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। প্রশাসন ও রাজনৈতিক নেতাদের যোগসাজশের অভিযোগে জনমনে ক্ষোভ বাড়ছে দিন দিন।

এ ঘাটের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষে ইতোমধ্যেই প্রাণ গেছে চর এলাহী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল মতিন তোতা ও যুবদল নেতা এরশাদ মাঝির। সাম্প্রতিক সংঘর্ষে সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাহাব উদ্দিন, তার ভাই প্রবাসী বেলাল, ছাত্রদল নেতা ইমন, মাসুদসহ অনেকে গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।

কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গাজী মুহাম্মদ ফৌজুল আজিম বলেন, চর এলাহী ঘাটের বিষয়ে পুলিশ কিছু জানে না।

এদিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানভীর ফরহাদ শামীম বলেন, ঘাটটি ইজারার প্রক্রিয়ায় থাকলেও সন্দ্বীপ উপজেলার একজন ব্যক্তি মালিকানা দাবি করে আদালতে রিট করেছেন। ফলে প্রশাসন ঘাটটি আর ইজারা দিতে পারছে না।

নোয়াখালী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মাহবুব আলগীর আলো বলেন, সন্ত্রাসীদের বিষয়ে বিএনপির জিরো টলারেন্স নীতিমালা অব্যাহত রয়েছে। প্রশাসনকে আমরা বলেছি জনস্বার্থে কঠোর পদক্ষেপ নিতে, কোনো তদবির না শুনে।

Leave a Reply

আরো সংবাদ পড়ুন
© তরঙ্গ টিভি
ওয়েবসাইট ডিজাইন : ইয়োলো হোস্ট