1. tv@tarangotv.com : তরঙ্গ টিভি : তরঙ্গ টিভি
  2. info@www.tarangotv.com : তরঙ্গ টিভি :
শনিবার, ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১২:০৫ অপরাহ্ন

ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু নির্বাচন ও নারীদের নিরাপত্তায় বিশেষ উদ্যোগ

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত: সোমবার, ২৫ আগস্ট, ২০২৫
  • ১২ বার পড়া হয়েছে

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনে নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। শিক্ষার্থীদের ব্যবহৃত কয়েকটি অনলাইন গ্রুপ বন্ধ করতে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে (বিটিআরসি) চিঠি দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। একই সঙ্গে নির্বাচন সুষ্ঠু করতে গ্রিন ফিউচার ফাউন্ডেশনের সব কার্যক্রম ও শাটল সার্ভিসও বন্ধ রাখার উদ্যোগ নিয়েছে প্রশাসন। নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী প্রার্থী ও সংশ্লিষ্ট পক্ষ থেকে ক্যাম্পাসে প্রচারণামূলক পোস্টারও সরিয়ে ফেলতে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। রোববার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়। এছাড়া ছাত্রলীগসংশ্লিষ্ট থাকায় বাতিল হচ্ছে জুলিয়াস সিজারসহ দুজনের প্রার্থিতা। পাশাপাশি ছাত্রদলের ভিপি প্রার্থীর বিরুদ্ধে উঠেছে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ।

এদিকে ডাকসু নির্বাচনকে ঘিরে ক্যাম্পাসে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে। রোববার বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীদের পদচারণায় মুখরিত ছিল ক্যাম্পাস। বিভিন্ন প্যানেলে প্রার্থীদের নিয়ে চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ। ভোটারদের কাছে গুরত্ব পাচ্ছে আঞ্চলিকতাও। ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনের তফশিল অনুযায়ী, আজ দুপুর ১টা পর্যন্ত প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করতে পারবেন। কাল বিকালে প্রার্থীদের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হবে। এরপর প্রার্থীরা আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনি প্রচার-প্রচারণা শুরু করবেন।

ডাকসু নির্বাচনে ফের আচরণবিধি লঙ্ঘন করার অভিযোগ উঠেছে ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেলে ভিপি পদের প্রার্থী আবিদুল ইসলাম খানের বিরুদ্ধে। তিনি একটি আবাসিক হলের রিডিংরুমে (পাঠকক্ষ) প্রবেশ করে নির্বাচনি প্রচারণা চালাতে দেখা গেছে। এ সময় তার সঙ্গে একই প্যানেলের আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক পদে মনোনীত মো. মেহেদী হাসানও ছিলেন বলে অভিযোগ উঠেছে। রোববার দুপুরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ছাত্র অধিকার পরিষদ সমর্থিত ডাকসু ফর চেঞ্জ প্যানেলের ভিপি প্রার্থী বিন ইয়ামিন মোল্লা ও ছাত্রশিবির সমর্থিত ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট প্যানেলের জিএস প্রার্থী এসএম ফরহাদ। এ সময় তারা এসব অভিযোগ তোলেন।

 

ডাকসু নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক করতে ৫-১১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সব পরীক্ষা সাময়িক স্থগিতসহ ৬টি পদক্ষেপ নিতে নির্বাচন কমিশনকে আহ্বান জানিয়েছে বাম সমর্থিত প্যানেল ‘প্রতিরোধ পর্ষদ’। রোববার দুপুর সাড়ে ১২টায় ঢাবির মধুর ক্যান্টিনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এই আহ্বান জানায় প্যানেলটি। এ সময় লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান প্যানেলের গণ-আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক পদপ্রার্থী মোজাম্মেল হক। তাদের প্রস্তাব তুলে ধরেন তিনি।

রোববার বিশ্ববিদ্যালয়ের এক বিজ্ঞপ্তি বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) চেয়ারম্যানের কাছে চিঠি পাঠিয়েছে। এতে ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নিরাপত্তা মঞ্চ’, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী সংসদ-১’ ও ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী সংসদ-২’ সহ আরও কয়েকটি চিহ্নিত অনলাইন পেজ অনতিবিলম্বে বন্ধ করে ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫ পর্যন্ত তা বলবৎ রাখার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানানো হয়েছে। একসঙ্গে গ্রিন ফিউচার ফাউন্ডেশন কর্তৃক বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে পরিচালিত বিভিন্ন সেবা কার্যক্রম ডাকসু নির্বাচনে প্রভাব ফেলতে পারে বিধায় ১০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সংগঠনটির সব ধরনের কার্যক্রম ও শাটল সার্ভিস ক্যাম্পাসে বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

এতে আরও বলা হয়, নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী প্রার্থী ও সংশ্লিষ্ট পক্ষ থেকে ক্যাম্পাসে যেসব প্রচারণামূলক বিলবোর্ড/ব্যানার টানানো রয়েছে কিংবা ইতোমধ্যে টানানো হয়েছে, সেগুলো সরিয়ে ফেলতে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কোনো প্রার্থী বা পক্ষ স্বপ্রণোদিত হয়ে কোনো ধরনের সেবামূলক কাজে অংশ নিতে পারবেন না। সব ধরনের উপঢৌকন বিলি-বণ্টন, আপ্যায়ন, অর্থ সহযোগিতা কিংবা অনুরূপ কার্যক্রম কঠোরভাবে নিষিদ্ধ থাকবে। এসব কার্যক্রম নির্বাচনি আচরণবিধি ভঙ্গ হবে বলে বিবেচিত হবে। প্রার্থীরা ২৫ আগস্ট পর্যন্ত হল কিংবা ক্যাম্পাসে প্রচারণা চালাতে পারবেন না। নির্ধারিত সময় অনুযায়ী ২৬ আগস্ট থেকে ৭ সেপ্টেম্বর রাত ১১টা পর্যন্ত ব্যক্তি অথবা সংগঠনের পরিচয়ে হল কিংবা ক্যাম্পাসে প্রচার কার্যক্রম চালাতে পারবেন। তবে এ সময়েও সামাজিক/আর্থিক/সেবামূলক সহযোগিতা বা কার্যক্রম পরিচালনা, মজলিস-মাহফিল আয়োজন কিংবা ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান/প্রাঙ্গণে প্রচারণা চালানো নিষিদ্ধ থাকবে। এসব কর্মকাণ্ড আচরণবিধি লঙ্ঘন হিসাবে গণ্য হবে এবং ‘নির্বাচন আচরণ বিধিমালা’ ধারা-১৭ অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসাবে বিবেচিত হবে।

এদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের প্রার্থিতা থেকে বাদ পড়তে যাচ্ছেন স্বতন্ত্র ভিপি (সহসভাপতি) পদপ্রার্থী হিসাবে লড়তে যাওয়া নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের সাবেক নেতা মো. জুলিয়াস সিজার তালুকদার। একই অভিযোগে বাদ পড়ছেন বায়েজিদ বোস্তামী। ডাকসু নির্বাচনের মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইয়ের পর বাতিলকৃত প্রার্থীদের আপিল নিষ্পত্তি ও আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ নিষ্পত্তির লক্ষ্যে গঠিত ট্রাইব্যুনাল কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তাছাড়া তাদের নাম ভোটার তালিকা থেকেও বাদ দেওয়া যেতে পারে বলে সুপারিশ করা হয়। রোববার বিকালে ডাকসু নির্বাচনের চিফ রিটার্নিং কর্মকর্তা অধ্যাপক ড. জসীম উদ্দিন বলেন, এটি উচ্চতর কমিটি। এই কমিটির সুপারিশ আমরা মানতে বাধ্য। ফলে পূর্ণ কমিশন বসে এই দুজনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

ট্রাইব্যুনাল কমিটির সুপারিশে বলা হয়েছে, অপরাধ বিজ্ঞান বিভাগের ২০১৪-২০১৫ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মো. জুলিয়াস সিজার তালুকদার ও রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৪-২০১৫ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী বায়েজিদ বোস্তামী সন্ত্রাসের দায়ে নিষিদ্ধ সংগঠনের সঙ্গে জড়িত ছিল এবং সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিল। অনুরূপ ব্যক্তিদের নাম ভোটার তালিকা থেকে ইতঃপূর্বে বাদ দেওয়া হয়েছে বিধায় এই দুই শিক্ষার্থীর নামও ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেওয়া যেতে পারে। ফলশ্রুতিতে মো. জুলিয়াস সিজার তালুকদার ও বায়েজিদ বোস্তামীর প্রার্থিতাও বাতিল করার জন্য সুপারিশ করা হলো।

এসময় ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেলের উদ্দেশে বিন ইয়ামিন মোল্লা বলেন, তাদের প্রার্থীরা রিডিংরুমে গেলেও নির্বাচনি আচরণ বিধিমালার মধ্যে পড়ছে না। তারা স্লোগান দিয়ে মিছিল নিয়ে গেলেও নির্বাচনি আচরণ বিধিমালার মধ্যে পড়ছে না। টিএসসিতে তাদের দলীয় ব্যানার-ফেস্টুন আছে। সেটি কী শিক্ষার্থীদের নির্বাচনকে প্রভাবিত করবে না? কিন্তু আমি যদি দলীয় ব্যানার-ফেস্টুন লাগানো শুরু করি, তখন বলবে নির্বাচনি আচরণ বিধিমালা ভঙ্গ করছে। আমার ক্ষেত্রে নির্বাচনি আচরণ বিধিমালা ভঙ্গ হয়, আর তাদের ক্ষেত্রে নির্বাচনি আচরণ বিধিমালা ভঙ্গ হয় না?

জিএস প্রার্থী এসএম ফরহাদ বলেন, নির্বাচন কমিশন এখন পর্যন্ত আমাদের পক্ষ থেকে দেওয়া কনসার্নগুলো আমলে নিচ্ছে না। আমরা দেখছি প্রার্থীদের কেউ কেউ রিডিংরুমে গিয়েও প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছেন বলে শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করছেন। এর ফলে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা ও অন্যান্য কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে বলে আমরা জানতে পেরেছি। নির্বাচন কমিশনকে অনুরোধ করব, কেউ নীতিমালা ভঙ্গ করলে তাদের প্রতি যেন ব্যবস্থা নেওয়া হয়।

এদিকে অমর একুশে হলে আবিদুল ইসলাম খানের রিডিংরুমে প্রচারণা চালানোর এমন একটি ভিডিও এই প্রতিবেদকের হাতে এসেছে। সেখানে দেখা যায় আবিদুল ইসলাম আবাসিক হলের রিডিংরুমে প্রবেশ করে সেখানে পড়তে থাকা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে করমর্দন (হ্যান্ডশেক) করছেন। যতজন শিক্ষার্থী রিডিংরুমে পড়ছিলেন সবার কাছে গিয়ে তিনি নিজের পরিচয় দিচ্ছিলেন ও দোয়া চাচ্ছিলেন। এ সময় তাকে কয়েকজনের সঙ্গে কোলাকুলিও করতে দেখা গেছে। এ সময় তার সঙ্গে ওই প্যানেলের আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক পদে মনোনীত মো. মেহেদী হাসানকে দেখা গেছে।

Leave a Reply

আরো সংবাদ পড়ুন
© তরঙ্গ টিভি
ওয়েবসাইট ডিজাইন : ইয়োলো হোস্ট