তৈরি পোশাক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ’র আগামী নির্বাচনে সম্মিলিত পরিষদের প্যানেল লিডার হবেন চৈতি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল কালাম। তিনি বর্তমানে বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএমএ) ও এর আগে ২০১২-১৩ মেয়াদে বিজিএমইএ’র পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। এ ছাড়া তিনি ২০১১-১২ ও ২০১২-১৩ মেয়াদে উত্তরা ক্লাবের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।
বৃহস্পতিবার রাজধানী ঢাকার একটি হোটেলে এক অনুষ্ঠানে সম্মিলিত পরিষদের সাবেক সভাপতিরা আবুল কালামকে প্যানেল নেতা হিসেবে শিল্প মালিকদের সাথে পরিচয় করিয়ে দেন।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বিজিএমইএ’র সাবেক সভাপতি এস.এম. ফজলুল হক, রেদওয়ান আহমেদ, কাজী মনিরুজ্জামান, মোস্তফা গোলাম কুদ্দুস, খন্দকার রফিকুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিটিএমএ সভাপতি শওকত আজিজ রাসেল।
ব্যবসায়ী নেতারা বলেন, কালামের নেতৃত্ব গার্মেন্টস সেক্টরের আগামীদিনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে এবং রপ্তানি আয়ের নতুন উচ্চতা অর্জনে সহায়তা করবে। এসময় তারা বলেন, ১৯৭৮ সালের জুলাই থেকে এই অ্যাসোসিয়েশনের ৪৬ বছরের যাত্রায় ২০ জন সভাপতি পেয়েছেন তারা, এদের মধ্যে ১৬ জন সভাপতি সম্মিলিত পরিষদ থেকে নির্বাচিত হয়েছেন।
স্বাগত বক্তব্যে বিজিএমইএ’র সাবেক সভাপতি ফারুক হাসান সেক্টরের বিভিন্ন উন্নয়ন ও অর্জন নিয়ে আলোচনা করেন। সম্মিলিত পরিষদের নেতৃত্ব সবসময় শিল্পের অগ্রগতির দিকে মনোনিবেশকারী নিবেদিতপ্রাণ উদ্যোক্তাদের একটি প্ল্যাটফর্ম।
কোভিড-১৯ মহামারির চরম পর্যায়ে বিজিএমইএ সদস্যরা তাকে সভাপতি নির্বাচিত করেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের বোর্ড সদস্যদের সমন্বিত প্রচেষ্টা, ব্র্যান্ড, ক্রেতা এবং উন্নয়ন অংশীদারদের সহায়তায়, আমরা সফলভাবে মহামারির চ্যালেঞ্জগুলোকে নেভিগেট করেছি এবং ব্যবসায়িক বৃদ্ধির গতিপথে ফিরে এসেছি। ব্যবসার পরিবেশকে সহজ করতে আমরা বেশ কয়েকটি নীতি সহজ করার জন্য সরকারের সাথেও কাজ করেছি। এর মধ্যে ছিল-বন্ড লাইসেন্স, ট্রেড লাইসেন্স এবং ইপিবি সার্টিফিকেটের মেয়াদ এক বছর থেকে সবোর্চ্চ পাঁচ বছর পর্যন্ত বাড়ানো।
তিনি আরও বলেন, জিএসপি সুবিধা এবং বিভিন্ন বাণিজ্য ব্লকের সাথে চুক্তির অধীনে অগ্রাধিকারমূলক বাজার সুবিধা পেতে ইপিবি সনদ অপরিহার্য। এছাড়া শিল্পের ওয়েস্টেজ (অপচয়) গণনাকে সহজ করতে সক্ষম হয়েছি। আমরা (বিজিএমইএ) ২০৩০ সালের মধ্যে ১০০ বিলিয়ন ডলারের রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য একটি বিস্তৃত পরিকল্পনাও তৈরি করেছি। এই রোডম্যাপটি স্বল্পমেয়াদি, মধ্যমেয়াদি এবং দীর্ঘমেয়াদে সেক্টরাল প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়নের জন্য প্রয়োজনীয় নীতি সহায়তা চিহ্নিত করেছে উল্লেখ করে ফারুক হাসান বলেন, সেক্টরের এই লক্ষ্য অর্জনের পাশাপাশি বৈশ্বিক ও স্থানীয় উভয় চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় শক্তিশালী নেতৃত্বের জরুরি প্রয়োজন। আর সম্মিলিত পরিষদের রয়েছে এই ধরনের নেতৃত্ব দানের সক্ষমতা।
প্যানেল লিডার আবুল কালাম বলেন, এই মুহূর্তে এই খাতের জন্য স্থিতিশীল আইনশৃঙ্খলা, রপ্তানি কার্যক্রম টিকিয়ে রাখার জন্য বাংকের আর্থিক সহায়তা এবং শিল্পকে সচল রাখতে গ্যাস ও বিদ্যুতের পর্যাপ্ত সরবরাহ প্রয়োজন।
তিনি আরও বলেন, বিজিএমইএ’র সদস্যরা যদি নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য আমাদের প্যানেলকে নির্বাচিত করেন, তা হলে আমরা আশাবাদী যে, সরকারের সহায়তায় আমরা সমাধান খুঁজে বের করবো। সম্মিলিত পরিষদ ধারাবাহিকভাবে একটি ঐক্যবদ্ধ শক্তি হিসেবে কাজ করে। বিভিন্ন সংকট কাটিয়ে ওঠতে এর অভিজ্ঞতা রয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ২০ অক্টোবর বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বিজিএমইএ পরিচালনা পর্ষদ বিলুপ্ত করে ১২০ দিনের মধ্যে একটি নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য একজন প্রশাসক নিয়োগ দেয়।
Leave a Reply