
ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরীফ ওসমান হাদির হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে বরগুনায় বিক্ষোভ মিছিল ও পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের ফটক অবরোধ করেছে জুলাই আন্দোলনে অংশ নেওয়া ছাত্র-জনতা। একই সঙ্গে জেলায় নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের অবিলম্বে গ্রেফতার এবং তাদের সব ধরনের কর্মকাণ্ড বন্ধের দাবিও জানান বিক্ষোভকারীরা।
বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) রাত প্রায় ১১টার দিকে বরগুনা প্রেসক্লাব সংলগ্ন সদর রোড এলাকা থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি বের হয়। পরে প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে মিছিলটি পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সামনে এসে অবস্থান কর্মসূচিতে রূপ নেয়। এ সময় প্রায় এক ঘণ্টা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের মূল ফটকের সামনে সড়ক অবরোধ করে রাখেন বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা।
অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা বলেন, শরীফ ওসমান হাদি গুলিবিদ্ধ হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেলেও এখন পর্যন্ত হত্যাকাণ্ডে জড়িত মূল আসামিদের গ্রেফতার করা হয়নি। বরগুনায় প্রশাসনের নজরদারি থাকার পরও নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা প্রকাশ্যে মিছিল-মিটিং করছে, অথচ তাদের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। এতে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিয়ে চরম উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।
বিক্ষোভকারীরা আরও বলেন, ‘আমাদের মতো বিপ্লবীদের আর কত রক্ত দিতে হবে? হাদির মতো আর কতজন জীবন দিলে রাজপথ ঠান্ডা হবে? কীভাবে ঘটনার ৪৮ ঘণ্টা পরও হত্যাকারীরা পালিয়ে যায়—এ বিষয়ে প্রশাসনের কাছে আমরা জবাব চাই।’ তারা বরগুনা থেকে ছাত্রলীগের অস্তিত্ব সম্পূর্ণভাবে বিলুপ্ত করতে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানান। একই সঙ্গে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দৃশ্যমান পদক্ষেপ না নেওয়া হলে আবারও জুলাই আন্দোলনে নামার ঘোষণা দেন।
জুলাই আন্দোলনে অংশ নেওয়া ইমাম হোসেন বলেন, ‘হত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়ে ছাত্রলীগ বরগুনায় থাকতে পারবে না। তারা যে হত্যাসহ নানা ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে, তা বরগুনার ছাত্র-জনতা ও সাধারণ মানুষ মেনে নেবে না। আমাদের কথা স্পষ্ট—বুলেটের ভয় দেখিয়ে আমাদের দমন করা যাবে না।’
আরেক বিক্ষোভকারী সিনহা রহমান বলেন, ‘হাদির হত্যাকারীরা কীভাবে ঘটনার ৪৮ ঘণ্টা পরও পালিয়ে যায়, তা প্রশাসনের চরম ব্যর্থতা ও হাস্যকর উদাহরণ। আমরা জুলাই আন্দোলনে রক্ত দিয়েছি, একাত্তরেও শহীদ হয়েছি, কিন্তু এখনো দেশ পুরোপুরি নিরাপদ হয়নি। বরগুনায় নিষিদ্ধ সংগঠনের নেতাকর্মীরা প্রকাশ্যে মিছিল করলেও তাদের গ্রেফতার করা হয় না। আবার যাদের গ্রেফতার করা হয়, তারাও দ্রুত ছাড়া পেয়ে যায়। বর্তমানে আমাদের নিরাপত্তা নেই। দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে আবারও আন্দোলনে নামতে বাধ্য হবো।’
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আব্দুল্লাহ আল মাসুদ বলেন, ‘পুলিশ যাদের অপরাধী মনে করে, তাদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হচ্ছে। আসামিরা আদালতের মাধ্যমে জামিন পায়—পুলিশের জামিন দেওয়ার কোনো এখতিয়ার নেই। পুলিশ আপনাদের পাশে আছে এবং আইনগত কার্যক্রম চলমান রয়েছে।